প্রসূণ চক্রবর্তী, বাঁকুড়া: হাতির হানা অব্যাহত উত্তর বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের শ্রীচন্দ্রপুর গ্রামে। হাতির হানায় ভাঙল বাড়ি ও দোকান। বৃষ্টির মধ্যেই গতকাল রাতে গঙ্গাজলঘাটি রেঞ্জের  শ্রীচন্দনপুর গ্রামে তাণ্ডব চালায় দল ছুট দুটি হাতি। কলগোড়া বাজারে প্রথমে আস্তিক মুখার্জীর একটি গুমটি ভাঙ্গে হাতিগুলি। তারপর গদরি বাউরির বাড়িতে হানাদেয়। হাতির হানায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাড়ির একাংশ।  জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে গঙ্গাজলঘাটি রেঞ্জে হাতি রয়েছে ৩টি, কাল্লাপুরে-২টি ও লটিয়াবনীতে-১টি। গ্রামবাসীরা হাতির তাণ্ডবের ঘটনায় রীতিমত ভীত সন্ত্রস্ত।

ওই হাতি গুলিই খাবারের সন্ধানে গ্রামে ঢুকে হামলা চালিয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের দাবি, হাতির উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির বাইরে বেরোতে পারিনি। আনুমানিক রাত তিনটা নাগাদ হাতি গ্রামে ঢুকে প্রায় আধ ঘন্টা ধরে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে। এই ঘটনার পর তারা যথেষ্ট আতঙ্কিত বলেই জানিয়েছেন।  বন দফতর জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন জানালে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী  ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।

স্থানীয়রা বলছেন, "রাত জেগে হাতি পাহারা দিতে হচ্ছে যাতে হাতি এলাকার কোনও ক্ষতি করতে না পারে। এই মুহূর্তে চরম আতঙ্কে রয়েছে আমরা। তাই বন দফতরের কাছে অনুরোধ যে ক্ষতি হয়েছে আমাদের সেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।'' অন্যদিকে পাত্রসায়ের বন দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, "সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।''

ঝাড়গ্রামেও এই হাতির তাণ্ডবের খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। কিছুদিন আগে হাতির দলের তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল এলাকায়। প্রায় পঁচিশটি হাতির দল রাত থেকে বড় চাঁদবিলা গ্রামে তাণ্ডব চালায়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হাতির দলের দাপটে নষ্ট হয়েছে বিঘের পর বিঘে জমির ধান। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাতেই নিজের জমির কাছে হাতির দলের মুখোমুখি হয়েছিলেন ওই গ্রামেরই বাসিন্দা পরীক্ষিত মাহাতো। হাতির দলের আক্রমণ থেকে প্রাণে বাঁচতে পুকুরে ঝাঁপ দিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, তারপর থেকেই নিখোঁজ ওই বাসিন্দা পরীক্ষিত মাহাতো। পরের দিন সকাল থেকেই ওই পুকুরে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু ওই ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের দাবি, হাতির পালের আক্রমণের সময় বারবার বনদফতরকে খবর দিলেও স্থানীয় প্রশাসন বা বন দফতরের তরফে কোনওরকম সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। সেই কারণেই নিজেরাই পুকুরে নেমে ওই ব্যক্তির খোঁজ করেছেন তাঁরা, কিন্তু তাঁকে পাওয়া যায়নি।