পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: দুর্ঘটনার কবলে পড়ে দিতে যেতে পারেননি পরীক্ষা। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে সবরকম ব্যবস্থাও করা হয়েছিল, যাতে দুর্ঘটনাগ্রস্তরা পরীক্ষায় বসতে পারেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থা এতটাই গুরুতর যে পরীক্ষা দিতেই পারলেন না বাঁকুড়ার তিন পরীক্ষার্থী। এক পরীক্ষার পর বাড়ি ফেরার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাঁরা। (HS Exams 2024)
বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের ঘটনা। গত বৃহস্পতিবার ছাঁদার হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিয়ে ফিরছিলেন প্রিয়জিৎ গড়াই, শুভম দাস এবং রণিত রক্ষিত নামের তিন পড়ুয়া। মোটর সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। সেই সময়, ছাঁদার-বেলিয়াতোড় রাস্তার উপর, মুড়াকাটার কাছে একটি লরির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে তাঁদের। (Bankura News)
জানা গিয়েছে, একটি টোটোকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন পরীক্ষার্থীরা। তাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোজা লরিতে গিয়ে ধাক্কা মারে মোটর সাইকেলটি। ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান তাঁরা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে বেলিয়াতোড় প্রাথমনিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে এবং তাঁদেরবাড়ির লোকজনকে। শেষ পর্যন্ত পুলিশই অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে তাঁদের।
এই ঘটনায় গুরুতর আহত হন ওই তিন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। বর্তমানে বাঁকুড়ার সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁরা। সেখানেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। কিন্তু তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়া জেলা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার যুগ্ম আহ্বায়ক গোরাচাঁদ কান্ত। শনিবার এই কথা জানান তিনি।
গোরাচাঁদবাবু জানিয়েছেন, হাসপাতালেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল তিন পড়ুয়ার জন্য। কিন্তু তাঁদের শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন রয়েছে। পরীক্ষা দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই কেউই। বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও, পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ওই তিন ছাত্রকে আরও একটি বছর অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান তিনি।
আহত প্রিয়জিতের বাবা সুনীল বরণ গড়াই জানান, তাঁর জেলে এবং বাকি দু'জন পরীক্ষার্থী কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। একটি বছর নষ্ট হয়ে গেল অবশ্যই কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু সকলে সেরে উঠুন, এই প্রার্থনাই করছেন পরিবারের সকলে। এর আগে পুরুলিয়াতেও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর দুর্ঘটনে কবলে পড়ার খবর সামনে আসে।