তুহিন অধিকারী,  বাঁকুড়া: পঞ্চায়েত ভোটের আগে (Panchayat Election 2023) বাজি বিস্ফোরণকাণ্ডের পর কড়া হাতে অভিযান চালায় পুলিশ প্রশাসন। একাধিক এলাকায় অবৈধ বাজি কারখানাগুলিকে বন্ধ করে  উদ্দেওয়া হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় গাড়ি গাড়ি বাজি। আর এবার ভরা দুর্গাপুজোয় (Durga Puja 2023) বাজির গোডাউনে হানা দিয়েছে পুলিশ (Police)।


বিপুল পরিমাণে নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার


বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী থানার ধানশিমলা এলাকায় রবীন্দ্রনাথ নন্দী নামের এক ব্যক্তির গোডাউনে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হানা দেয় বিষ্ণুপুরের এসডিপিও নেতৃত্বে সোনামুখী থানার পুলিশ। সেখান থেকে ১৩.৫ কুইন্টাল নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। ঘটনা পরিপ্রেক্ষিতে রবীন্দ্রনাথ নন্দীকে গ্রেফতার করে সোনামুখী থানা পুলিশ। জানা যায় দুর্গাপুজোর জন্যই এই বিপুল পরিমাণে শব্দবাজি মজুদ করেছিলেন ওই ব্যক্তি। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে আগামীকাল বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে পাঠানো হবে।


নথি চাইতেই ঘুম উড়ল মালিকের


বিষ্ণুপুরের এসডিপিও কুতুবউদ্দিন খান বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এই অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণে নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার করা হয়েছে। মালিকের কাছে নথি চাইলে তিনি নির্দিষ্ট কাগজ না দেখাতে পারায় সব শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ধরনের অভিযান লাগাতার চলবে বলে জানান এসডিপিও।


অতীতে ভয়াবহ বাজি বিস্ফোরণ 


প্রসঙ্গত, অগাস্টের শেষে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল দত্তপুকুরের মোচপোল (Duttapukur incident)। তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে বিস্ফোরণে উড়ে যায় প্রায় আস্ত একটা বাড়ি। ছিন্নভিন্ন দেহাংশ ছিটকে পড়েছিল প্রায় ২০০ মিটার দূরে। কারও কারও হাত-পা উড়ে গিয়েছিল। আগুনে ঝলসে গিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন। অনেকেই বলেছিলেন, কয়েক কিলোমিটার দূরে বারাসাত পর্যন্ত শোনা গিয়েছে বিস্ফোরণের শব্দ। বিস্ফোরণস্থলে নীল ড্রামে মজুত ছিল প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট (Amoneium Nitrate) ও পটাসিয়াম ক্লোরেট (Potassium Cloret)। বাজি কারখানার অদূরে হদিশ মিলেছিল ল্য়াবরেটরিরও। এই প্রেক্ষাপটে দত্তপুকুরে বিস্ফোরণে RDX ব্যবহার হয়েছিল বলে চাঞ্চল্য়কর অভিযোগ তুলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। 


আরও পড়ুন, চতুর্থীতে আকাশ আংশিক মেঘলা, বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে কি ?


পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছিল পুলিশি নিষ্ক্রিয়তারও। স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল,'শুধু পুলিশের তোলা আর তৃণমূল নেতাদের কাটমানি খাওয়ার পরিমাণ বেড়েছিল। আগে কাটমানি ১০ হাজার হলে, এখন ২০ হাজার। আগে ৫০ হাজার নিলে, এখন এক লাখ। পঞ্চায়েতের পাশে কার্যত এটিএম খুলেছিল পুলিশ। ফাঁড়িতে পৌঁছে যেত তোলার টাকা।' তবে দত্তপুকুরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৯ জনের মৃত্যুর পর কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিল পুলিশ (Police)। এরপর পরই দত্তপুকুরের মোচপোল, কাঠুরিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ১ হাজার ৬০০ কেজি নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেছিল পুলিশ।  মধ্য রাতে ৫-৬টি গাড়ি করে উদ্ধার হওয়া বাজি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল থানায়।