তুহিন অধিকারী, বিষ্ণুপুর (বাঁকুড়া) : মাংসের দোকান ও দোকানদারের বাড়িতে যৌথ অভিযান বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ ও ফুড সেফটি দফতরের। দোকানদারের বাড়ি থেকে মোট ৬০ কেজি পচা মাংস উদ্ধার। ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি ফ্রিজ দু'টি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম সুমন কাইতি। 


বিষ্ণুপুর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে গোপালগঞ্জের একটি মাংসের দোকানের বিরুদ্ধে বিষ্ণুপুর থানায় অভিযোগ আসে। অভিযোগ ওঠে, এক দোকানদার পচা মাংস বিক্রি করছে। এমনকী বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাড়িতেও এই মাংস সরবরাহ করা হয়। অভিযোগ পেয়ে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ খবর দেয় বিষ্ণুপুর সিএমওএইচ দফতরের ফুড সেফটি অফিসারের কাছে। এরপর বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ ও ফুড সেফটি দফতরের যৌথ উদ্যোগে অভিযান চলে। গোপালগঞ্জ ওই মাংসের দোকানে এবং বৈলাপাড়ায় দোকানদারের বাড়িতে হানা দেয় তারা। দোকানদারের বাড়ি থেকে দু'টি ফ্রিজে মোট ৬০ কেজি পচা মাংস পাওয়া যায়। ফ্রিজ দু'টি বাজেয়াপ্ত করা হয়। অভিযুক্ত দোকানদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম সুমন কাইতি। 


ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ নিয়ে কী বলে থাকেন বিশেষজ্ঞরা ?


কাঁচা মাংস চাইলে ফ্রিজে রাখা যেতে পারে। মাংস পরিষ্কার করে কৌটোয় রেখে দিন, তারপর রাখুন ফ্রিজের চিলারে। কিন্তু খুব বেশি দিন রাখবেন না। বেশ কিছু সমস্যা হতে পারে। বেশিদিন ফ্রিজে রাখলে মাংসে ব্যাকটিরিয়া ধরে যায়, বিষক্রিয়া হতে পারে। নষ্ট হয়ে যায় স্বাদও। আর প্যাকড মাংস ফ্রিজে রাখার আগে প্যাকেটের ওপর লেখা গাইডলাইন অবশ্যই পড়ে নেবেন। মাংস একদিনের বেশি কখনওই ফ্রিজে রাখবেন না। অন্য খাবারের সঙ্গে নয়, রাখবেন আলাদা করে। বরফ থেকে বার করে রান্না করা মাংসও একদিনের বেশি রাখবেন না। রান্না করা মাংস ফ্রিজে রাখতে পারেন, তবে দেখবেন, গরম অবস্থায় ঢোকাবেন না যেন। 


সালটা ছিল ২০১৮। সেবার শহরের বিভিন্ন হোটেলে পচা মাংস সরবরাহের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য। শুধু তা-ই নয়, মুরগির মাংসের পরিবর্তে অন্য মাংস সরবরাহের অভিযোগ ওঠে। এতই পচা পাওয়া যায় সেই মাংস, যে প্রাথমিকভাবে তার পরীক্ষাও করা যায়নি। এই ঘটনার পর পচা মাংস বিক্রির চক্র সামনে চলে আসে। তারপর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় অভিযান শুরু হয়। এই আবহে ২০১৮ সালে জলপাইগুড়ির একটি ঘটনাও শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। জলপাইগুড়ির একটি বিপণিতে অভিযান চালায় কোতোয়ালি থানা এবং জলপাইগুড়ি পুরসভার আধিকারিকরা। খাবারের প্যাকেট পরীক্ষা করতে গিয়েই চমকে ওঠেন তাঁরা। দেখা যায়, মুরগির মাংস এবং পনিরের একাধিক প্যাকেটের মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে। অথচ, সেই প্যাকেটই বিক্রি করা হচ্ছিল গ্রাহকদের কাছে।