পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : সন্ধেবেলা মুড়ি চানাচুর। কিংবা মুড়ি আর তেলেভাজা। কিংবা নারকেল দিয়ে মুড়ি। বা স্রেফ জল ঢালা মুড়ি ! খাদ্য সম্ভারে যতই মুখরোচক বিকল্প আসুক না কেন, বাঙালির মুড়ির প্রতি চিরন্তন টান। আর বিশেষত বাঁকুড়া জেলায় মুড়ির জনপ্রিয়তা সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। সেই মুড়ির  স্বাদ একসঙ্গে পেতেই সকলে প্রতিবছর জড়ো হন দ্বারকেশ্বর নদের চড়ে।  এ-সময় গোটা এলাকা ম ম করে ভেজা মুড়ির গন্ধে।   


এ জেলার দ্বারকেশ্বর নদের চড় জুড়ে মুড়ির মেলা।  নানান উপকরন দিয়ে মুড়ি ভিজিয়ে সকলে মিলে খাওয়ার ধুম মুড়ি মেলাতে। প্রতি বছর মাঘ মাসের ৪ তারিখ বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া দ্বারকেশ্বর নদের সঞ্জীবনী ঘাটে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। মুড়ির চুম্বক টানে। লাল মাটির জেলার মামুষের বড্ড প্রিয় পদ।      


বাঁকুড়া মানেই মুড়ি ! বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার মুড়ি মেলার জনপ্রিয়তা দেখলে এ কথা যে কেউ মানবে। মুড়ির সঙ্গে এই লাল মাটির জেলার আত্মিক যোগ।  আর সেটা আলাদাই মাত্রা পায়, যখন সকলে একসঙ্গে বসে মুড়ি খান। 


প্রতি বছর ৪ মাঘ বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার দ্বারকেশ্বর নদের সঞ্জীবনী ঘাটে হয় এই উৎসব। কেঞ্জাকুড়া সহ আশেপাশের ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষ ছুটে আসে মুড়ি মেলাতে। শুধু গ্রামের মানুষ নয়। তাদের আত্মীয় পরিজনেরাও সামিল হয় মুড়ির মেলাতে। নানান উপকরন দিয়ে এক সঙ্গে বসে গল্প করতে করতে মুড়ি খাওয়ার জমাটি আনন্দ চেটে পুটে নেন সকলে।


এবার মুড়ি মেলায় খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি চলল সেলফি তোলা। আর তারপর সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট। আর তাই মুড়-মেলা এখন শুধু বাঁকুড়াবাসীর নয়, অন্য জেলা থেকেও আসছেন মানুষজন।


কী কারণে শুরু হল এই মেলা ? লোক মুখে শোনা যায়, সঞ্জীবনী আশ্রমে এক সাধক হরিনাম সংকীর্তন দেখতে আসতেন। আসতেন আশে পাশের গ্রামের মানুষজনও। রাতভর নাম-সংকীর্তন দেখে সকালে বাড়ি ফেরার পথে দ্বারকেশ্বর নদের পাড়ে বসে মুড়ি খেয়ে বাড়ি ফিরতেন। আর এর থেকেই ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠে কেঞ্জাকুড়া দ্বারকেশ্বর নদের মুড়ি মেলা। সেই থেকেই কেঞ্জাকুড়া মুড়ি মেলা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।            


আরও পড়ুন : 


১০০ রকম মাছের অসংখ্য পদ নিয়ে দিঘায় 'সি-ফুড ফেস্টিভ্যাল'