পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) পোস্ট করায় তিন নেতাকে শোকজ করলেন বিজেপির বাঁকুড়া জেলা নেতৃত্ব। বেশ কিছুদিন ধরেই সামাজিক মাধ্যমে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হয়ে পোস্ট করছিলেন এই তিন নেতা। পোস্টগুলি নজরে আসতেই দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তাঁদের শোকজ করা হল। এর জবাবে দল সন্তষ্ট না হলে তিন জনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তাও দিয়েছেন জেলা সভাপতি। এই ঘটনা নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া, বিক্ষুব্ধ বিজেপির নেতারা বুঝে গেছেন যে দলের বিধায়ক- সাংসদ কোনও কাজ করছেন না। তাই তাঁরা আজ হতাশায় এই সব পোস্ট করছেন।


এই ঘটনা ঘিরে প্রকাশ্যে চলে এসেছে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বেশ কিছু দিন ধরেই বাঁকুড়া বিজেপির এই তিন নেতা সামাজিক মাধ্যমে জেলা নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বিভিন্ন রকম পোস্ট করেছিলেন। তরুণ এই নেতাদের পোস্ট ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় জেলার রাজনীতিতে। চর্চা শুরু হয় দলের অন্দরেও। অনেকেই কমেন্ট বক্সে পোস্টকে সমর্থন করে নানান মতামত ব্যক্ত করতে থাকেন। আর তাতেই জেলা বিজেপি নেতৃত্বের অস্বস্তি বাড়ে। 




পোস্ট ঘিরে বিতর্ক


পোস্টের পরেই বাঁকুড়া বিধানসভার বিজেপি আহ্বায়ক কৌশিক সিংহ, বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য রিঙ্কু শর্মা ও বিজেপি যুব মোর্চার প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি মোহিত শর্মা -এই তিন বিজেপি নেতাকে শোকজ করেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। চিঠিতে তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে । শুধু তা-ই নয়, এই তিন জন তৃণমূলের সঙ্গে যোগসাজশে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল।


এদিকে প্রকাশ্য সভামঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ফের বিতর্কে জড়িয়েছেন বাঁকুড়ারই বিজেপি নেতা বিকাশ ঘোষ। এর আগেও একাধিকবার প্রকাশ্যে নিদান দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন ওই নেতা। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে রবিবার বিজেপির বাঁকুড়া ৪ নম্বর মণ্ডলের উদ্যোগে পুয়াবাগান এলাকায় একটি জনসভার আয়োজন করা হয়। সেই জনসভায় দলের অন্যান্য জেলা নেতৃত্বের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য বিকাশ ঘোষ। সেই সভাতেই দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন বিকাশ ঘোষ।


তিনি বলেন, "ভারতীয় জনতা পার্টি শান্তি-শৃঙ্খলা মেনে রাজনীতি করে। আপনারা সিদ্ধান্ত নেবেন, আগামীদিনে কীভাবে রাজনীতি করবেন। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের কর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। আমরা কিন্তু চুপচাপ বসে থাকব না। বিজেপি কর্মীদের বলে রাখছি, যদি কোনও তৃণমূল নেতা হুমকি দেন, চমকান, আপনারা পরিষ্কার সেই তৃণমূল নেতাকে গাছে বেঁধে রেখে আচ্ছা করে উত্তম-মধ্যম দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দেবেন। আমাদের এমএলএ বসে আছেন, সুপারিশ করে দেবেন চিকিৎসার জন্য। তারপর বাড়িতে পৌঁছে দেব।"


আরও পড়ুন ; "কোনও তৃণমূল নেতা হুমকি দিলে গাছে বেঁধে উত্তম-মধ্যম দিন", ফের BJP নেতার মন্তব্যে বিতর্ক !