পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: দ্বিতীয় স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে স্বামী ও প্রথম স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দিল বাঁকুড়া (Bankura) জেলা আদালতের চতুর্থ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানার ভাড়াডিহি গ্রামে। আঠেরো জন সাক্ষী ও মৃতার মৃত্যুকালীন জবানবন্দীর ভিত্তিতেই স্বামী ও তার প্রথম স্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।


দ্বিতীয় স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা স্বামী ও সতীনের-


আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানার ভাড়াডিহি গ্রামের বাসিন্দা পেশায় চাষী হারু বাউরীর সঙ্গে বিয়ে হয় পদ্মা বাউরীর। ২০১৫ সালে পদ্মা তার স্বামীকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। এবং তারপর সেই বছরই রীনা বাউরীকে বিয়ে করে অভিযুক্ত হারু। স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের পরই হারু বাউরীর বাড়িতে ফিরে আসে পদ্মা। তার ফিরে আসার পরই দুই সতীনের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর বাড়িতেই টিভি দেখছিলেন দ্বিতীয় স্ত্রী রীনা। অভিযোগ উঠেছে যে, সেই সময়ই স্বামী হারু বাউরী ও তার প্রথম স্ত্রী পদ্মা দুজনে মিলে রীনা বাউরীর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে বাড়ির দরজা বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীকালে স্থানীয় বাসিন্দারা গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় রীনা বাউরীকে উদ্ধার করে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। কিন্তু তাঁর শরীরের বেশিরভাগ অংশ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি করার চারদিন পর মৃত্যু হয় রীনার। হাসপাতালেই মৃত্যুকালীন অবস্থায় পুলিশের কাছে গোপন জবানবন্দি দেন রীনা। এরপরই মৃতার পরিবারের সদস্যদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী হারু বাউরী ও তার প্রথম স্ত্রী রীনা বাউরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, মোট আঠেরোজন সাক্ষী ও মৃতার মৃত্যুকালীন জবানবন্দির ভিত্তিতে স্বামী ও সতীনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। আজ অভিযুক্ত দুজনকে কারাদন্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বাঁকুড়া জেলা আদালতের চতুর্থ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক।


আরও পড়ুন - Bankura News: বছরের প্রথম কালবৈশাখীতে লণ্ডভণ্ড বাঁকুড়া শহরের একাংশ


অভিযোগ উঠেছে যে, প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়ে পরিকল্পনা মাফিক দ্বিতীয় স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে অভিযুক্ত হারু বাউরী। আজ অভিযুক্ত দুজনকে আদালত যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দেওয়ার পরই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।