পূর্ণেন্দু সিংহ, ওন্দা (বাঁকুড়া) : কাজ শুরু হয়েছিল চার বছর আগে। কিন্তু শিলান্যাসের (Foundation) চার বছর পরেও শেষ হয়নি দ্বারকেশ্বর নদের ওপর সেতু তৈরির কাজ। দ্বারকেশ্বর (Darakeswar) নদে জল কম থাকলেও, বিশবাঁও জলে সেতু তৈরির কাজ। তার জেরে গ্রাম থেকে বাঁকুড়ার (Bankura) ওন্দা (Onda)  শহরে যেতে এখনও নৌকাই ভরসা গ্রামবাসীদের। নদের বুকে সার সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পিলার। বেশির ভাগের ওপর এখনও গার্ডার বসেনি। পুরভোটের আবহে তা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে। বাগবিতণ্ডায় জড়িয়েছে তৃণমূল (TMC) ও বিজেপি (BJP)। শিলান্যাসের পর থেকে এখনও নদের দুপাড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। সেতুর কাজ কবে শেষ হবে? পুরভোটের আবহে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে বাঁকুড়ার ওন্দা থানার অন্তর্গত একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের মনে। ওন্দার গামিদ্যার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোট এলেই সবাই বলে সেতু করে দেব। ভোটটা দেবেন। ভোট পেরিয়ে গেলে নেতাদের পাত্তা নেই। মূলত কৃষি নির্ভর এলাকা ওন্দা। নিত্যদিনের কাজ হোক বা কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে দৌড়নো, শহরে যেতে ভরসা সেই নৌকা। এই দুর্ভোগ কাটবে কবে? প্রশ্ন স্থানীয়দের।


দ্বারকেশ্বর নদের একপাশে রয়েছে ওন্দা শহর। আরেকপাশে রয়েছে গামিদ্যা, অযোধ্যা, নিকুঞ্জপুর, আশাপুরের মতো বহু গ্রাম। এই সব গ্রামগুলিও ওন্দা থানার অন্তর্গত। নিত্যদিনের কাজে ওন্দা শহরে যেতে নৌকায় দ্বারকেশ্বর পেরোতে হয় গ্রামবাসীদের। ওন্দার নিকুঞ্জপুরের বাসিন্দারা বলেছেন, নদীর ওপারে ওন্দায় সব প্রশাসনিক দফতর। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, বাজার। প্রতিদিনই নানা কারণে সবাইকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করতে হয়। প্রশাসনকে বলব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেতুর কাজ শেষ হোক। এদিকে চাবড়া ঘাটের নৌকাচালকদের কথায়, নদীতে জল বেড়ে গেলে প্রশাসনের তরফে বারণ করে দেয়। জল কমলে নৌকা নিয়ে যাতায়াত করি। সাইকেল নিয়ে ১০ টাকা ও মোটরসাইকেল নিয়ে ২০ টাকা ভাড়া।


ওন্দা শহরের সঙ্গে গ্রামগুলিকে সড়কপথে জুড়তে সেতু তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০১৭ সালে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বরাদ্দ হয়েছিল ৩৫ কোটি টাকা। চার বছর পরেও সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায়, তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। পাল্টা জবাব দিয়েছে শাসক শিবির। রাঢ়বঙ্গের বিজেপি আহ্বায়ক পার্থ কুণ্ডু বলেছেন, 'তৃণমূলের এমএলএ হাত ধরে কাজ শুরু হয়েছিল। এখখন এই বিধানসভা বিজেপির। পরিকল্পিত ভাবে কাজ বন্ধ। বিষ্ণুপুর সাব ডিভিশনে পাঁচটা বিধানসভায় বিজেপি জিতেছে। রাজনীতি করার জন্য আর কাটমানির জন্য মানুষের দুর্দশার কথা না ভেবে কাজ ঝুলিয়ে রেখেছে।' পাল্টা তৃণমূল নেতা তথা বাঁকুড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবাজি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'বিজেপির মত আমরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি আর দেশ বিক্রি করি না। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভরসা। করোনা পরিস্থিতি ও বর্ষায় নদীতে অনেক জল থাকায় কাজে ঢিলে। কাজ শুরু হয়েছে। এক বছরের মধ্যে কমপ্লিট হয়ে যাবে।'


আরও পড়ুন- ১ ডিসেম্বর থেকে আলু সংরক্ষণে অতিরিক্ত ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি বাঁকুড়ায়, মাথায় হাত চাষিদের