প্রসূন চক্রবর্তী, শালতোড়া (বাঁকুড়া) : ফের বুনো হাতির (Elephants) হামলা। বাঁকুড়ার (Bankura) শালতোড়ায় আচমকায় ঢুকে পড়ল পাঁচটি বুনো হাতির একটি দল। এরপর গতকাল রাতভর তাণ্ডব চালায় হাতিগুলি। লন্ডভন্ড করে দেয় কৃষকদের বহু পরিশ্রমের ফসল। শুধুমাত্র আলু নয়, সারা বছর ধরে কষ্ট করে ফলানো ধান যা গোলাঘরে রাখা ছিল তাও সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেয়। পাশাপাশি সরষের খেতও মাড়িয়ে দেয় এই পাঁচটি বুনো হাতি।
গত কয়েক মাস ধরেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তাণ্ডব চালাচ্ছে কয়েকটি দাঁতাল হাতি। যার জেরে জেরবার কৃষক, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বন দফতর। এই পরিস্থিতিতে গতকালও হামলা চালায় বুনো হাতির দল। ভোররাত নাগাদ স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়ির দরজা, জানালা ভেঙে ফেলে দাঁতালের দল। রামকৃষ্ণ মণ্ডল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, দু'দিন ছাড়া ছাড়াই হাতির তাণ্ডবে আতঙ্কে পুরো গ্রাম। এই পরিস্থিতিতে আমরা চাই, বন দফতরের তরফে সুষ্ঠু একটা সমাধান করা হোক।
আরও পড়ুন ; বাঁকুড়ায় দলছুট হাতি দেখতে গিয়ে হাতির হানায় গুরুতর জখম যুবক
এদিকে দিনের পর দিন বুনো হাতির তাণ্ডবে বাঁকুড়া জেলার প্রান্তিক কৃষিনির্ভর গ্রামগুলি চরম সমস্যার সম্মুখীন। শালতোড়ার বিট অফিসার সুজিত কুমার সিংহ বলেন, যাদের যাদের ক্ষতি হয়েছে, তাদের জন্য আমরা গ্রামগুলিতে ঘুরে ঘুরে ফর্ম বিলি করছি। হাতিগুলি এখন বড়জোড়া রেঞ্জে রয়েছে।
দিনকয়েক আগেই গ্রামে ঢুকে পড়া দলছুট একটি হাতিকে দেখতে গিয়ে হাতির হানায় গুরুতর জখম হন এক যুবক। আহত যুবকের নাম সুবল মুর্মু। বাঁকুড়ার পাত্রসায়র ব্লকের সাহাপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। আহত যুবককে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বন দফতর সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর বনবিভাগে ঢুকে পড়ে পাঁচটি হাতির একটি দল। এরপর ওই দলটি অপর একটি দলের সঙ্গে মিলিত হয়। দুটি দল মিলিয়ে ১১টি হাতি দ্বারকেশ্বর নদ পেরিয়ে সোনামুখীর দিকে রওনা হয়ে গেলেও ওই দলের একটি হাতি দলছুট হয়ে দ্বারকেশ্বরের অপর পাড়ে থেকে যায়।
দলছুট হাতিটি সাহাপুর এলাকায় গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করলে স্থানীয় যুবক সুবল মুর্মু হাতি দেখতে যান। এই সময় হাতিটি সুবল মুর্মুকে তাড়া করলে তিনি কাদায় পা পিছলে পড়ে যান। সুবলের দাবি, এরপরই হাতিটি তাঁকে পায়ে মাড়িয়ে দেয়। স্থানীয়রা ও বনকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত সুবলকে উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।