পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : যখন তখন আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামছে। কিছুক্ষণ পরেই আবার রোদ।  ক্ষণিকের বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় জল জমে যাচ্ছে। সেই জমা জলেই জন্মাচ্ছে মশার লার্ভা। তার জেরেই বাড়ছে মশাবাহিত রোগের দাপট। একের পর এক জেলায় হাসপাতাল ভরছে ডেঙ্গি - ম্যালেরিয়া রোগীতে । 


উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি থেকে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের খবর এসেছিল আগেই, আর এবার নজরে বাঁকুড়া। এখানে মশাবাহিত দুটি রোগের জোড়া ফলায় বিপর্যস্ত মানুষ। পরিসংখ্যান বলছে, গত ৭ মাসে বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৯৬। ওন্দা ও বাঁকুড়া সদর ব্লক ছাড়াও বাঁকুড়া পুর-এলাকাতেও দাপট দেখাচ্ছে  এডিস বাহিত ডেঙ্গি।  বাঁকুড়া পৌরসভা এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা শূন্য বলে দাবি  করেছেন পৌরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার। এর পরেও ডেঙ্গি প্রতিরোধে ধারাবাহিকভাবে জনসচেতনতামূলক প্রচার চালানো হবে বলে জানান তিনি। 


শুধু ডেঙ্গিই নয়। চলতি মাস পর্যন্ত বাঁকুড়া জেলায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ৮০। রানিবাঁধ ও ছাতনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি। যদিও এ বছর মশা-বাহিত রোগের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেই দাবি করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক। বাঁকুড়া পুরসভার তরফে চলছে সচেতনতা প্রচার। বাড়ি বাড়ি গিয়ে রক্তপরীক্ষাও করা হচ্ছে।  কিন্তু ভয়াবহতা কমছে কই ?  বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেশ কিছু রোগীর জন্য মশারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।  কয়েক জন রোগীকে H.D.U বা High Dependency Unit অর্থাৎ' উচ্চ নির্ভরতা ইউনিটে' রাখা হয়েছে। 


এডিস ইজিপ্টাই মশাই মূলত ডেঙ্গির বাহক। বর্তমানে এডিস অ্য়ালবোপিক্টাস মশার কামড়েও ডেঙ্গির সংক্রমণ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এডিস ইজিপ্টাই মশার আঁতুড়ঘরে থাবা বসাচ্ছে এডিস অ্য়ালবোপিক্টাস মশা। ফলে জ্বরের পাশাপাশি ডেঙ্গি রোগীর মধ্য়ে পেট খারাপের লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। 


এরই মধ্যে জুনের পরিসংখ্যানই যথেষ্ট ভয় ধরানো। রাজ্য সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে,  ডেঙ্গি সংক্রমণে শীর্ষে উত্তর ২৪ পরগনা। গত বছরও তাই ছিল। এরপর রয়েছে মালদা। তারপর মুর্শিদাবাদ ও হুগলি।  মুর্শিদাবাদে জুন পর্যন্ত ১৫৩ জন, হুগলিতে ১৪৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন গত মাস পর্যন্ত।


ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হয়েছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসনও।  কলকাতাতে ডেঙ্গির দাপচ রুখতে  প্রচার পদ্ধতি পাল্টেছে কলকাতা পুরসভা। ড্রোন উড়িয়ে প্রচার চালানোর পাশাপাশি বড় আবাসন ও হাউসিংগুলোকে চিঠি পাঠাবে পুরসভা। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় মশার আঁতুড়ঘর হাইরাইজের বারান্দায় টবের জনা জলে বা নির্মীয়মান বাড়ির মধ্যে।  


আরও পড়ুন 


অগাস্ট শুরুতেই নিম্নচাপের সঙ্কেত, ৯ জেলায় তুমুল বৃষ্টি বৃহস্পতিবারেই?


 আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।