পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : অ্যাডিনো ভাইরাস (Adeno Virus) নিয়ে তীব্র আতঙ্কের মধ্যেই জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (Bankura Sammilani Medical College and Hospital) ভর্তি ২৭ শিশু। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের (State Health Department) অ্যাডভাইসরি অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে শুরু করলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 


গত ২৪ ঘণ্টায় বাঁকুড়া হাসপাতালে জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছে ২৭টি শিশু। হাসপাতালে মোট চিকিৎসাধীন রয়েছে ৬০-এর বেশি শিশু। পিকু ওয়ার্ডে ভর্তি ৯ শিশু। শিশু বহির্বিভাগে জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়েও ভিড় জমছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। 


এই অবস্থায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মতই বুধবার সকাল থেকেই তৎপর বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। দফায় দফায় বৈঠক করে শিশুদের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আউটডোর বিভাগে খোলা হচ্ছে এআরআই ইউনিট। এছাড়াও স্বাস্থ্য দফতরের যা নির্দেশ রয়েছে সেগুলি গুছিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান মেডিক্যালের অধ্যক্ষ।


উদ্বেগপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর-


প্রসঙ্গত, অ্যাডিনো (Adeno) পরিস্থিতি নিয়ে গতকালই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) সঙ্গে স্বাস্থ্য-সচিব এবং মুখ্যসচিবের বৈঠক হয়েছে। সূত্রের দাবি, সেই বৈঠকে উদ্বেগপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কোভিডের সময় যেভাবে কাজ করা হয়েছে, এক্ষেত্রেও যেন সেই রকম ব্যবস্থা করা হয়। অক্সিজেনের অভাব যাতে না হয় সেই বিষয়ে নজর রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।


এদিনই ১০ দফা অ্যাডভাইসরি জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তাতে বলা হয়েছে, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি আক্রান্ত শিশুদের জন্য ২৪ ঘণ্টার ক্লিনিক করতে হবে। যে যে হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজে শিশু বিভাগ আছে, সেখানে আলাদা আউটডোর চালু করতে হবে, যাতে সাধারণ বহির্বিভাগে এইসব রোগীকে অপেক্ষা করতে না হয়। হাসপাতাল প্রধান বা অধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়া শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি আক্রান্ত শিশু রোগীদের রেফার করা যাবে না। ভেন্টিলেটর ও অন্য সামগ্রী প্রস্তুত রাখতে হবে।


আরও বলা হয়েছে, শিশু বিভাগের সঙ্গে যুক্ত থাকা জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে লাগাতে হবে। শিশুদের জনবহুল এলাকায় না নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, মাস্ক ব্যবহার করতে। হাসপাতালগুলিকে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এই বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য ৫টি হাসপাতালকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের থেকে পরামর্শ নিতে হবে। বেসরকারি হাসপাতাল বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। 


আরও পড়ুন ; তুঙ্গে অ্যাডিনো আতঙ্ক, ১ মার্চ পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যুর খবর