পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: কয়েক দিনের ব্যবধানে, একবার বিধায়কের হাত ধরে, আরেকবার সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করলেন এক তৃণমূল কর্মী। যা ঘিরে বিজেপির অন্দরেই ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলে গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করেছে তৃণমূল। পাল্টা তৃণমূলকে নিজেদের ঘর সামলানোর পরামর্শ দিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি নেতৃত্ব।  


প্রথমবার বিধায়কের হাত ধরে! আর দ্বিতীয়বার সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাত ধরে! কয়েক দিনের ব্যবধানে, বিজেপিতে একই ব্যক্তির দু'বার যোগদান ঘিরে জোর শোরগোল শুরু হয়েছে বাঁকুড়ায়! ৩১ ডিসেম্বর, বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানার হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করে জুনবেদিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূল কর্মী শেখ শামিম। 


কিন্তু ২৫ জানুয়ারি সেই ব্যক্তিই ফের একবার বিজেপির পতাকা তুলে নিলেন! তবে এবার বাঁকুড়ার সাংসদ ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের হাত থেকে! আর এই দুই যোগদানের ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দলীয় নেতৃ্ত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিজেপিরই একাংশ। দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে, একই ব্যক্তি একই দলে দু'বার কী করে যোগদান করতে পারেন?


বাঁকুড়ার  বিজেপি নেতা কৌশিক সিংহের অভিযোগ, একই ব্যক্তিকে দুবার করে কীভাবে যোগদান করাতে পারে, বহুদিন ধরে আমরা দেখতে পারছি, দলের মধ্যে একটা বেনিয়ম চলছে, সংগঠনটাকে একদম শেষ করে দিয়ে, কিছু নেতা স্বার্থ সিদ্ধি করার জন্য দলটাকে স্বার্থসিদ্ধি করার জন্য পরিচালনা করছে


বিজেপির অন্দরে যখন এই প্রশ্ন উঠছে, তখন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলে আক্রমণ শানাতে দেরি করেনি তৃণমূল! আগে ঘর সামলান, কটাক্ষের সুরে তৃণমূলকে পরামর্শ বিজেপির


বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলছেন, বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব, সেই অন্তর্দ্বন্দ্ব চাপা দেওয়ার জন্য ভোটের আগে প্রতিবারই যেরকম নাটক করে, সে নিজেদেরই লোকদের ক্যামেরার সামনে নিয়ে এসে বলে তৃণমূল থেকে নাকি বিজেপিতে জয়েন করল। সুভাষ সরকার তাকে নিয়ে নাটক করলেন, যে তৃণমূলের খুব বড় নেতা, আমাদের অঞ্চলের কোনও নেতা এদের চেনে না। 


বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা  সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের দাবি, তৃণমূল আগে নিজেদের ঘর সামলাক। কারণ উনি যে তৃণমূল থেকে এসেছেন, এটা তো স্বীকার করেছেন। তাহলে তার অর্থ কী দাঁড়ায়। তৃণমূলের ঘর ভাঙছে। 


যদিও দলে একই ব্যক্তির দু'বার যোগদান নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ক। 


বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের কথায়, হ্যাঁ শেখ শামিম তো আমাদের বিধায়কের হাত দিয়েই যোগদান করেছে। সে আবার গতকাল ইচ্ছাপ্রকাশ করে সাংসদ এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর হাত দিয়ে যোগদান করবে, এটা তোআপত্তির কিছু নেই। এটা করতেই পারে। আর তাই আমি তাকে করিয়েছি। + এতে অপরাধের কী আছে? একই দলে তো আছে।


সামনেই লোকসভা ভোট। উনিশের ভোটে বাঁকুড়া জেলার দুটি আসনেই জয়ী হয়েছে বিজেপি! কিন্তু এবার কী হবে? জিততে মরিয়া শাসক-বিরোধী উভয়পক্ষ। তার আগে দলবদল নিয়ে সরগরম জেলার রাজনীতি!