কলকাতা: মাংস খাওয়া শেষ হয়ে গেলে পড়ে থাকে হাড়। তবে এই হাড় অনেকেই ফেলে রাখতে চান না। কেউ হাড় চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়ে নেন। কেউ আবার হাড়ের মজ্জা চুষে খেতে ভালবাসেন। অনেকে বলেন, হাড় চিবিয়ে খাওয়া শরীরের পক্ষে খারাপ। আর এর মজ্জ তো নাকি আরও খারাপ। কিন্তু সত্যিই কি তাই ? হাড়ের মজ্জা আদতে ভাল না খারাপ ? এবিপি লাইভকে এই প্রশ্নগুলিরই উত্তর দিলেন নারায়ণা মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ চিকিৎসক পদ্মজা নন্দী


চিকেনের হাড়ের মজ্জা ভাল না খারাপ ?


পুষ্টিবিদ পদ্মজা জানাচ্ছেন, এটি শরীরের জন্য খুবই ভাল। কারণ হাড়ের মধ্যে মজ্জায় প্রচুর একাধিক পুষ্টিগুণ রয়েছে। অন্যদিকে এর মধ্যে ফ্যাট একেবারেই কম থাকে। তাই হাড়ের মজ্জা খাওয়া নিরাপদ। শরীরের একাধিক উপকারে লাগে এই মজ্জা।


কী থাকে হাড়ের মজ্জায় ?


হাড়ের মজ্জায় যে ফ্যাট টিস্যু রয়েছে, তাতে অ্যাডিপোনেকটিন থাকে। এই বিশেষ উপাদানটি ফ্যাট ভাঙতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এতে গ্লুকোস্যামাইন, গ্লাইসিন, কনজুগেটেড লিনোলেয়িক অ্যাসিড রয়েছে। পাশাপাশি ভিটামিন বি১২-এর গুণে সমৃদ্ধ মাংসের হাড়ের এই লাল অংশ। ক্যালোরির পরিমাণ বেশি হলেও এতে আয়রন, ভিটামিন ই, ভিটামিন এ, থিয়ামিন ও ফসফরাস রয়েছে। এর পাশাপাশি এতে রাইবোফ্লাভিনও রয়েছে। 


হাড়ের মজ্জা খেলে কী হয় ?



  • প্রদাহ কমায়: মাংসের হাড়ের মজ্জায় গ্লুকোস্যামাইন, গ্লাইসিন, কনজুগেটেড লিনোলেয়িক অ্যাসিড রয়েছে। এই উপাদানগুলি প্রদাহ কমায়। এর ফলে প্রদাহজনিত রোগের আশঙ্কা কমে যায়। এই ধরনের রোগের মধ্যে একটি হল আর্থ্রাইটিস।

  • মস্তিষ্কের কোশ ভাল রাখে: অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে মস্তিষ্কের কোশের ক্ষতি হয়। দ্রুত কোশ নষ্ট হতে থাকে। হাড়ের মজ্জায় ভিটামিন বি১২ থাকে। এই বিশেষ উপাদানটি মস্তিষ্কের কোশের জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো কাজ করে। ফলে বয়সকালেও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। 

  • মেটাবলিক সিনড্রোমের ঝুঁকি কমায়: হাড়ের মধ্যে থাকা অ্যাডিপোনেকটিন ফ্যাট ভাঙতে সাহায্য করে। এর ফলে ওজনের সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু রোগ এড়ানো যায়। বেশি ওজন থেকে মেটাবলিক সিনড্রোম দেখা যায়। ডায়াবেটিস মেটাবলিক সিনড্রোমের মধ্যে অন্যতম একটি রোগ। ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখে অ্যাডিপোনেকটিন।

  • ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়: অতিরিক্ত ওজন বেশ কিছু ক্যানসারের কারণ হতে পারে। এই ঝুঁকির মোকাবিলা করতে সাহায্য করে অ্যাডিপোনেকটিন। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত ওজন যাদের, তাদের শরীরে অ্যাডিপোনেকটিনের পরিমাণ কম।


ডিসক্লেইমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


আরও পড়ুন - Kitchen Tips: শিলে বাটা মশলা কেন না খেলেই নয় ? এই ৪ গুণ হয়তো অনেকেরই অজানা