পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : বাঁকুড়ার (Bankura) শালতোড়া থেকে কার্টনবন্দি অবস্থায় উদ্ধার আসানসোলের (Asansol) ব্যবসায়ীর হাত-পা বাঁধা মৃতদেহ। ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিখোঁজ ডায়েরির সূত্র ধরে মেলে মৃতের পরিচয়। ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে খুন বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করছে পুলিশ।
শুক্রবার বিকেলে বাঁকুড়ার শালতোড়া থানার ঝগড়াডিহি এলাকায় হাত- পা বাঁধা কার্টনবন্দি এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে শালতোড়া থানার পুলিশ। মৃতদেহ দেখেই পুলিশের অনুমান হয়, খুন করা হয়েছে তাঁকে। এরপর বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় মিসিং ডায়েরির খোঁজ শুরু করে পুলিশ। পুলিশ জানতে পারে, আসানসোলের হীরাপুর থানায় বৃহস্পতিবার এক ব্যবসায়ীর মিসিং ডায়েরি হয়েছিল। সেই ব্যবাসায়ী এই উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি কি না তা জানার কাজ শুরু হয়।
তখন পুলিশ জানতে পারে, উদ্ধার হওয়া মৃতদেহ ওই নিখোঁজ ব্যবসায়ী সঈদ মহম্মদ তৌফিকের। নিমডাঙা জামুড়িয়ার বাসিন্দা। ঘটনার তদন্তে নেমে বিভিন্ন নথি উদ্ধারের পাশাপাশি কার্টন থেকেও বিভিন্ন তথ্য উদ্ধার করে শালতোড়া থানার পুলিশ। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে শুক্রবার রাতেই হীরপুর থানা এলাকা থেকে গোলাম জিলামি ওরফে গোল্ডি নামে এক ব্যাক্তিকে আটক করে পুলিশ। সে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে খুনের ঘটনা স্বীকার করে বলে দাবি। শনিবার অভিযুক্ত গোল্ডিকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
কীভাবে খুন ?
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল অভিযুক্ত গোল্ডির সাথে তৌফিকের। পুলিশি জেরায় গোল্ডি জানিয়েছে, তৌফিকের কাছে ১০ লক্ষ টাকা পাওনা ছিল তার। কিন্তু টাকা চাইলেও তিনি দিচ্ছিলেন না। তাই তৌফিককে খুন করার পরিকল্পনা করে গোল্ডি। বৃহস্পতিবার রাতে হীরপুরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে খাবারে বিষ মিশিয়ে তৌফিককে বেঁহুশ করে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। এরপরে কাদের খান নামে আর একজনের সহযোগিতায় তৌফিকের মৃতদেহ হাত পা বেঁধে কার্টনবন্দি করে মোটর বাইকে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। গোপন পথ ধরে দামোদর নদ পেরিয়ে শালতোড়া ঝগড়াডিহি এলাকায় রাস্তায় ধারে ফেলে দিয়ে চম্পট দেয় গোল্ডি ও কাদের।
পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করে কাদের খানকে। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা চালাতে চায় পুলিশ। আর্থিক লেনদেনের কারণে এই খুনের ঘটনা বলে পুলিশ মনে করছে। আরও কেউ যুক্ত কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।