পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার ওন্দায় লুপ লাইনে দুটি মালগাড়ির সংঘর্ষ। একটি ইঞ্জিন-সহ দুটি মালগাড়ির ৬টি বগি লাইনচ্যুত হয়। একজন চালক আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত প্ল্যাটফর্ম ও সিগন্যাল রুম। ভোর ৪টে নাগাদ এই দুর্ঘটনার জেরে আদ্রা-খড়গপুর শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওন্দা স্টেশনের কাছে লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির পিছনে ধাক্কা মারে বাঁকুড়ার দিক থেকে আসা আরেকটি মালগাড়ি। বাঁকুড়ার দিক থেকে ডাউনে এসে ধাক্কা মারে ওই মালগাড়িটি। ২টি গাড়ির ৩টি করে বগি বেলাইন হয়ে যায়। একটির উপর আরেকটি রেক উঠে গিয়েছে। একটি ইঞ্জিন-সহ দুটি মালগাড়ির মোট ৬টি বগি লাইনচ্যুত হয়। স্থানীয়রাই চালকদের উদ্ধার করেন। ওভারহেড তারের ক্ষতি হয়েছে, ইঞ্জিনেরও ক্ষতি হয়েছে।
একই লাইনে দুটি মালগাড়ি কী করে এল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রেলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। এখন এলাকায় রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা এসে পৌঁছেছেন।
এক স্থানীয় বাসিন্দা বলছেন, 'হঠাৎ খুব আওয়াজ। বাড়ি থেকে ছুটে এসে দেখি ট্রেনের উপর ট্রেন চেপে গিয়েছে। এসে দেখি ভিতরে পাইলট বসে। ওরা আওয়াজ দেয়। ওদের উদ্ধার করে নিয়ে প্ল্যাটফর্মে দিয়ে আসি।' আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, 'ভীষণ আওয়াজ, চমকে উঠে ছুটে এসেছি। যা দেখলাম অনেকটা ক্ষতি হয়েছে। কতগুলো বগি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পোস্ট, ওভারহেড তারে ক্ষতি হয়েছে। একটার উপর আরেকটা রেক উঠে গিয়েছে।'
কয়েকদিন আগেই ওড়িশার বালেশ্বরে করমন্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার ক্ষত এখনও তাজা। মারা গিয়েছিলেন প্রায় ৩০০ যাত্রী। আহত হাজারেরও বেশি। লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে গিয়ে ধাক্কা মেরেছিল যাত্রিবাহী ট্রেন। ওই দুর্ঘটনা নিয়ে এখন সিবিআই তদন্ত চলছে। মেন লাইনের সিগন্যাল থাকলেও কীভাবে লুপ লাইনে এসে ঢুকেছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস - তা নিয়ে এখন বিস্তর কাঁটাছেঁড়া চলছে। গাফিলতি থেকে ষড়যন্ত্র- একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে। সেই আবহেই এবার বাঁকুড়ার ওন্দাতেও প্রায় একই ঘটনা ঘটল। একটি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও সেখানে এসে পড়ল অন্য একটি মালগাড়ি। সংঘর্ষও হল। মালগাড়ি বলে হয়তো সেই অর্থে প্রাণহানি হয়নি, তবে ক্ষতি হয়েছে রেলের সম্পত্তির। যা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: অসময়ে বেশি খাবার খেয়ে ফেলার প্রবণতা রয়েছে? এই সমস্যা দূর করতে কী কী করবেন