কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও অমিতাভ রথ : শৈশবে একই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী বাপি লাহিড়ি। ছোটবেলায় বাপির তবলা বাজানো থেকে বাড়িতে সঙ্গীতের পরিবেশ, সবকিছু নিয়েই স্মৃতিচারণ করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।


অমর সঙ্গী থেকে আমার তুমি....আশা ও ভালবাসা থেকে অমর প্রেম। বহু সুপারহিট বাংলা গানের সুর দিয়েছিলেন বাপি লাহিড়ি। নিজেও গেয়েছেন প্রচুর বাংলা গান। বলিউডের ডিস্কো কিংয়ের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ টলিউডও।


জলপাইগুড়িতে জন্ম হলেও, বাপি লাহিড়ির কলকাতা কানেকশন ছিল ছোট থেকেই ! আর তাঁর একেবারে শৈশবের বন্ধু ছিলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু বন্ধুই নয়, বাঁশদ্রোণীতে একই বাড়িতে ভাড়া থাকত দু’জনের পরিবার। 


বাপি লাহিড়ির বাবা অপরেশ লাহিড়ি এবং মা বাঁশরী লাহিড়ি- দু’জনেই ছিলেন সঙ্গীত জগতের মানুষ। তাই ছোট থেকেই সঙ্গীতের পরিবেশে বড় হয়েছেন বাপি। মা-বাবার কাছ থেকেই তাঁর গানের প্রথম তালিম নেওয়া। বাড়িতে গানের পরিবেশ তো ছিলেই, একইসঙ্গে বাঁশদ্রোণীর যে এলাকায় তাঁরা থাকতেন, তার আশেপাশেও ছিল গুণী ও কৃতিদের ছড়াছড়ি! 


পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও বাপি লাহিড়িরা যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, তার ঠিক পাশেই ছিল কানন দেবীর বাড়ি। একটু এগোলেই উত্‍পল দত্তের বাড়ি ‘কল্লোল’। শিল্পমন্ত্রী ও বাপি লাহিড়ির শৈশবের বন্ধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, উল্টোদিকের বাড়িতে ছবি বিশ্বাস, পাশে বিশ্বজিত্‍, বাঁয়ে কানন দেবী, এই আবহাওয়ার মধ্যেই আমরা বড় হয়েছি।


গানের পাশাপাশি ছোটবেলা থেকে তবলা বাজানোর দিকে খুব ঝোঁক ছিল বাপি লাহিড়ির। আর বাজাতেনও নাকি চমত্‍কার। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, ছোটবেলায় বাপি লাহিড়ি খুব ভাল তবলা বাজাত। আমার মামা গীতিকার শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর সঙ্গে অপরেশ লাহিড়ির সাংঘাতিক ভাল সুসম্পর্ক ছিল। ছোটবেলা থেকে তাঁর তবলা বাদন আমরা শুনেছি। তখন টালিগঞ্জ শিল্পী সংসদ বা টালিগঞ্জ সাংস্কৃতিক সংসদ নাম দিয়ে অনুষ্ঠান হত ছোটবেলায়। আমার মামা গান লিখতেন, অপরেশ লাহিড়ির প্রায় প্রত্যেকটি গানই আমার মামার লেখা।


এরপর একটা সময় বাঁশদ্রোণী থেকে নাকতলায় চলে আসে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার। অন্য জায়গায় চলে যান বাপি লাহিড়িরাও। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরাও চলে গেছি নাকতলায়, ওরাও চলে গেছে। তারপর সঙ্গীতকার সুরকার বাপির সঙ্গে একবার দেখা হয়েছে পরিণত বয়সে। হঠাত্‍ চলে গেল। মনটা সত্যিই খারাপ হয়ে গেল। পরিবারের একজনকে হারালাম। অতি ছোটবেলার একজন বন্ধুকে হারালাম। 


একদম ছোটবেলার বন্ধুকে হারিয়ে মন খারাপ শিল্পমন্ত্রীর।