কলকাতা : দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলের একের পর এক হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী-বিধায়ক জেলে। সাম্প্রতিক সংযোজন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রেশন কেলেঙ্কারি মামলায় আপাতত ইডি-র হেফাজতে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। এই আবহে এবার আত্মশুদ্ধির সুর শোনা গেল ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের (Arjun Singh) গলায়। শ্যামনগরে দলীয় এক কর্মসূচিতে তিনি বলেন, "এজেন্সির সঙ্গে লড়তে গেলে নিজেকেও ঠিক রাখতে হবে। এই লোকটা যদি দু'দিন আগে পার্টির নামে নিজের স্বার্থে কিছু মানুষকে ভয় দেখিয়েছেন-অত্যাচার করেছেন, ওই পাড়ার মানুষ যখন ভোট দিতে যাবেন তখন তাঁকে বুথে বসে থাকতে দেখলে, বুথে গিয়ে সেই লোক পাল্টে অন্য লোককে ভোট দিয়ে দেবেন। এর উপর নজর রাখতে হবে। কোনও নাক কাটা, কান কাটা, গাল কাটা লোককে বুথে বসতে দেওয়া যাবে না।"
অর্জুন বলেন, "সভ্য-ভদ্র মায়েরা, দিদিরা বা আগে যাঁরা কাউন্সিলররা ছিলেন যাঁদের হয়তো কোনও কারণে টিকিট দেওয়া হয়নি, তাঁদের সমাজে ভাবমূর্তি ভাল থাকলে তাঁদের বুথে বসাতে হবে। এখন তো আবার পানের দোকান, চায়ের দোকানে বসাই ছেড়ে দিয়েছে। এখন আমরা কেউ পান-চায়ের দোকানে বসছিই না। আমরা পাড়ায় ক্লাবের বাইরে আড্ডা মারছি না। আমরা ভেবে নিয়েছি, সবাই আমাদের কথা শোনে। আমাদের ভোট দিয়ে দেবে। এরকম হয় না। মানুষের সঙ্গে মিশতে শিখুন। আমাদের এলাকায় ৯০ শতাংশ অফিস খোলে না। সবাই বাড়ি থেকে রাজনীতি শুরু করে দিয়েছেন।"
তাঁর মন্তব্যের পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছি বিজেপি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "গাল কাটা, নাক কাটা...এটাই তো অর্জুন সিংহের পরিচয়। তৃণমূল কংগ্রেস তো এই কথা বলতো। অর্জুন সিং যখন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে বেড়াতে এসেছিলেন, বিজেপির প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তখন আজ যে কথাগুলি বলছেন- এই কথাগুলিই বলতেন। যে- তৃণমূল এই মুহূর্তে জনবিচ্ছিন্ন, তৃণমূল এই মুহূর্তে জমিদারি চালাচ্ছে, তৃণমূল মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, মানুষের উপর নিজের ইচ্ছাকে চাপিয়ে দিচ্ছে, তৃণমূল মনে করছে পশ্চিমবঙ্গে পুরোটাই তাদের জায়গির আছে। এগুলো তে অর্জুন সিংহের ভাষা। তাহলে আবার আজ তৃণমূলে বিজেপি থেকে ফিরে গেলেন কেন ? ওখানে গিয়ে কি শুদ্ধিকরণের দায়িত্ব নিয়েছেন অর্জুন সিং ? আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের বেলাশেষে কিছু কিছু মানুষ হঠাৎ বিবেকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যাত্রা দলের মতো। "