প্রবীর চক্রবর্তী, কলকাতাঃ মৃত ছেলের পচাগলা দেহর (Deadbody) পাশে পড়ে রইলেন কোমর ভাঙা অসহায় মা। অসুস্থ মাকে উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে (Vidyasagar Hospital) পাঠিয়েছে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ (Parnashree Police)। বেহালা ১৭ পাঠক পাড়ায় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা গিয়েছে, মা রুমা বারিক ৭৯ ছেলে রতন বারিক ৫৫ একসঙ্গে নিজেদের বাড়ির দুতলায় থাকতো । দুতলায় আরো একটা ভাড়াটে ও থাকতো। স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে মায়ের দু'বছর আগে কোমর ভেঙে যায় তারপর ছেলে রতন বাড়িক মায়ের সেবা করতো, দুজনে একসাথেই থাকতো। গতকালকের হঠাৎই পচা গলা গন্ধ পায় তার বাড়ির ভাড়াটে। এবং বেশ কয়েকদিন ধরে দরজা খুলছিল না। সন্দেহ হলে প্রতিবেশীদের ও পর্ণশ্রী থানায় খবর দেয় । থানা এসে দরজা খুলে দেখে মা অসহায় অবস্থায় ছেলের মৃত দেহর পাশে পড়ে আছে। পর্ণশ্রী থানার পুলিশ অসুস্থ মাকে উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে।প্রসঙ্গত, গতবছরও এমনই একটি মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী ছিল কলকাতা। চোখের সামনে মারা গিয়েছে ছেলে, পক্ষাঘাতগ্রস্থ হওয়ায় নিজ উঠে ডাকতেও পারেননি কাউকে। ছেলের মৃতদেহের পাশে এক বিছানাতেই পড়ে ছিলেন বৃদ্ধা মা। কয়েকঘন্টা পর পুরসভার কর্মীরা গিয়ে দেহ উদ্ধার করেন। এমন মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে ঠাকুরপুকুর থানার অন্তর্গত চন্দ্রপল্লিতে। প্রতিবেশীদের দাবি, কয়েকদিন আগে মা ও ছেলে করোনায় আক্রান্ত হন। তারপর থেকে ছেলেকে আর বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি। সন্দেহ হওয়ায় থানায় খবর দেন প্রতিবেশীরা। সন্ধ্যায় পুলিশ তালা ভেঙে ছেলের মৃতদেহ ও অসুস্থ মাকে উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন, 'অভিজিৎ-র মতো অবস্থা হবে', হুমকি নারকেলডাঙার পরিবারকে, কে এই অভিজিৎ ?
তবে এতো গেল মৃত্যুর ঘটনায় অসহায় মুহূর্ত। তবে এমনই মৃতদেহের পাশে রাত কাটানোর ঘটনাও রয়েছে বাংলায়। যদিও তা শিহরন তা সবাইকেই। কারণ সেটি একটি খুনের ঘটনা। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই বাড়িতেই ছেলের হাতে খুন হন পরেশনাথ-ঊষারানি সরকার। বাড়িতেই মাথা কেটে পরেশনাথ-ঊষারানি সরকারকে খুনের অভিযোগ ওঠে ছেলের বিরুদ্ধে। তদন্তে জানা যায়, বাড়ির দোতলায় বাবা এবং একতলায় মাকে গলা কেটে খুন করে ছেলে। এখানেই শেষ নয়, নৃশংসভাবে খুনের পরেও দু’জনের মৃতদেহ একতলায় আনার পরে পাশের ঘরে রাত কাটায় ছেলে। এদিকে পরের দিন মিস্ত্রী ডেকে বাড়ির মধ্যে চৌবাচ্চার গর্ত খোঁড়ার সময় সন্দেহ হয় আত্মীয়দের। এরপর সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দেয় আত্মীয়রাই। খবর পুলিশের কাছে পৌঁছতেই গ্রেফতার করা হয় ছেলে শোভন সরকারকে। ইতিমধ্যেই কেটে গিয়েছে ৯ বছর। সম্প্রতি চলতি মাসের শুরুতেই ঠাকুরপুকুরে বাবা-মাকে নৃশংসভাবে খুনে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে ছেলে শোভন সরকার। অভিযুক্ত ছেলের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছে আদালত।