নারকেলডাঙা: এবিপি আনন্দর (ABP Ananda) খবরের জের। নারকেলডাঙায় (Narkeldanga) ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে পেটে লাথি মারার অভিযোগে এবার জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করল পুলিশ। ঘটনায় অভিযুক্ত প্রোমোটার-সহ গ্রেফতার ৮। যুক্ত করা হয়েছে শ্লীলতাহানির ধারাও। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে ডিসি ইএসডি প্রিয়ব্রত রায় জানিয়েছেন, অভিযোগকারীরা ফের কোনও অভিযোগ জানালে নতুন মামলা রুজু হবে।


পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযুক্তদের আড়াল করার নালিশ: নারকেলডাঙাকাণ্ডে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মারার অভিযোগের পর এবার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযুক্তদের আড়াল করার নালিশ। অন্তঃসত্ত্বার পরিবারের দাবি, ঘটনায় তাঁরা ৯-১০ জনকে সনাক্ত করে অভিযোগ জানাতে চাইলেও, রাতে হাসপাতালে গিয়ে নারকেলডাঙা থানার পুলিশ আধিকারিকরা ২-৩ জনের বেশি নাম নিতে চাননি। এর পাশাপাশি, অন্তঃসত্ত্বার পরিবারের দাবি, তাঁর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় অস্ত্রোপচার করে প্রি-ম্যাচিওর ডেলিভারি করানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে গর্ভস্থ শিশুর সুস্থতা সম্পর্কে চিকিত্সকদের তরফে কোনও নিশ্চয়তা মেলেনি। দাবি অন্তঃসত্ত্বার পরিবারের।


প্রোমোটিং-বিবাদে একের পর এক অভিযোগ: নারকেলডাঙায় প্রোমোটিং-বিবাদে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পুলিশ ও স্থানীয় বিধায়ক পরেশ পালের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মারার পাশাপাশি, পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পরেও, বিধায়কের অনুগামী প্রোমোটারের দলবল ঘর দখল করে রেখেছে। অন্তঃসত্ত্বার স্বামী ও শ্বশুরকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অন্তঃসত্ত্বার শ্বশুর অভিযোগকারী শিবশঙ্কর দাসের দাবি, অভিযোগপত্র ইংরেজিতে লিখে তাঁকে দিয়ে সই করানো হয়েছে। ফলে বয়ান না বুঝেই সই করেছেন বলে দাবি অভিযোগকারীর। এদিন নারকেলডাঙাকাণ্ডে হাসপাতালে ভর্তি অন্তঃসত্ত্বাকে দেখতে গেলেন সুকান্ত মজুমদার।


নারকেলডাঙাকাণ্ডে তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল ঘনিষ্ঠ প্রোমোটারের নামে ঘর দখলের অভিযোগ। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, যে ঘর নিয়ে বিবাদ, সেখানে ডাঁই করে রাখা বাঁশ, বালির বস্তা। কাঠের পাটাতনে পেরেক পুঁতে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যদিও ঘর দখল ও অন্তঃসত্ত্বাকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রোমোটারের কর্মচারীরা। 


নারকেলডাঙায় (Narkeldanga Violence) বাড়িতে ঢুকে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মারার অভিযোগ। ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এই মুহূর্তে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার ইডেন হাসপাতালে ভর্তি। এদিকে ব্যাথা না কমলে সিজার করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন চিকিৎসকেরা বলেই জানিয়েছেন শ্বশুর।


সময়ের আগেই সিজার ? কী বলছেন চিকিৎসকেরা ?


 শ্বশুরমশাই জানিয়েছেন, 'এখনও তীব্র ব্যাথা রয়েছে বৌমার। নজরে রেখেছেন চিকিৎসকরা। ব্যথা যদি না কমে সিজার করতে হবে। বৌমাকে যেভাবে মারধর করেছে, এখন বোঝা যাচ্ছে না বাচ্চাটা ঠিক আছে, কি নেই ?' একরাশ আতঙ্ক নিয়ে জানালেন তিনি। প্রসঙ্গত, নারকেলডাঙার বাসিন্দা শিবশঙ্কর দাস ও তাঁর ছেলে দীপক দাসের অভিযোগ, প্রোমোটিং সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য তাঁদের দেখা করতে ডেকেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার এবং বিধায়ক পরেশ পাল। সে জন্য তাঁদের 'ছেলেরা এসে তলব' করে যায় বলে, দাবি শিবশঙ্করের। কিন্তু বাবা-ছেলে কেউই যেতে রাজি হননি। অভিযোগ, এরপরই শুরু হয় তাণ্ডব। অভিযোগ, 'প্রায় ২০০ মত ছেলে এসে আচমকাই তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয় এবং দীপককে বেধড়ক মারধর করা হয়।'যদিও কোনও মতে প্রাণ বাঁচিয়ে তিনি নারকেলডাঙা থানায় যান। এদিকে নারকেলডাঙা থানায় আরও অসুবিধা অপেক্ষা করছিল বলে, দাবি শিবশঙ্কর ও দীপকের। তাঁদের দাবি, থানায় অভিযোগ তো নেওয়া হয়নি। উল্টে  তাঁদের, 'আক্রান্ত দুজনকেই গ্রেফতার করা হয়।'