সমীরণ পাল, বেলঘরিয়া: বেলঘরিয়ায় মদ্যপানের প্রতিবাদ করায় শিক্ষককে মারধর। কামারহাটি পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। রাস্তায় ৬ জনকে মদ্য়পান করতে দেখে প্রতিবাদ শিক্ষকের। ৫ থেকে ৬ জন শিক্ষকের উপর হামলা চালায়। বেলঘরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের শিক্ষকের পরিবারের। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে। সিসিটিভি ফুটেজে শিক্ষককে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে এক মহিলাকে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এলাকায় যথেষ্ট পরিচিত আক্রান্ত ব্যক্তি। তিনি পেশায় গৃহশিক্ষক। আঁকা শেখান। ভোরবেল রাস্তায় বসে মদ্যপান করায় প্রতিবাদ করেছেন বলে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। স্বভাবতই এলাকায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। 

Continues below advertisement

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, একজন মহিলাও মারধর করছেন প্রতিবাদী ওই শিক্ষককে। নাগাড়ে চড়-থাপ্পড় মারা হচ্ছে। রাস্তায় ফেলেও চলেছে মারধর। বেলঘরিয়ায় নন্দনগরের ঝিল পাড়ে বসে মদ্যপান করছিলেন কয়েকজন যুবক এবং এক যুবতী। ভোরবেলা প্রকাশ্য রাস্তায় এভাবে কয়েকজনকে মদ্যপান করতে দেখে খারাপ লাগে অঙ্কন শিক্ষক নিরুপম পাল। তিনি প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, তারপর প্রথমে তাঁর বাইক ফেলে দেওয়া হয়। এরপর ওই মদ্যপের দল চড়াও হয় তাঁর উপর। শুরু হয় বেদম মার। শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এই শিক্ষকের। গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত তিনি। নিরুপম জানিয়েছেন, সকালবেলা এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফিরছিলেন তিনি। সাতসকালে ওভাবে রাস্তায় বসে কয়েকজনকে মদ খেতে দেখে বিষয়টি ভাল লাগেনি তাঁর। এলাকার পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে এই আশঙ্কায় প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। আর তার জেরেই জুটেছে বেধড়ক মার। 

আক্রান্ত শিক্ষক নিরুপম পাল জানিয়েছেন, গতকাল এক আত্মীয়ের বাড়িতে কালীপুজোর নিমন্ত্রণ ছিল তাঁর। সকালে সেখান থেকেই বাড়ি ফিরছিলেন পৌনে ছ'টা নাগাদ। অভিযোগ, তিনি তখন দেখেন ভোরের আলো ফুটে গেলেও কয়েকজন যুবক এবং একজন যুবতী রাস্তায় বসেই মদ্যপান করছে। প্রতিবাদ করায় মদ্যপের দল তেড়ে আসে তাঁর দিকে। মাথায়, চোখে, ঠোঁটে এবং বুকে মারধর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিরুপম। নাক থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। নিরুপমের কথায়, 'ওদের তুই করেও বলিনি, তুমি করেই বলেছিলাম। জিজ্ঞেস করেছিলাম মদ খাচ্ছ কেন? তাতে আমায় জিজ্ঞেস করল তুই কে? তোর কী দরকার? তারপর বাইক ফেলে দিল। মারধর করল।' 

Continues below advertisement

আক্রান্ত শিক্ষকের অভিযোগ, তাঁর মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। বুকে, পেটে লাথি মারা হয়। স্থানীয় কয়েকজন তাঁকে দেখতে পেয়ে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। মদ্যপদের কিল, চড়, ঘুষি থেকে কার্যত রক্ষা করেন নিরুপমকে। সূত্রের খবর, আক্রান্তের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করিয়ে বাড়িতেই ছিলেন তিনি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ৫-৬ জন যুবক, একজন যুবতী চড়াও হয়েছে নিরুপমের উপর। অবাধে চলতে থাকে চড়, লাথি, ঘুষি। বাইক ফেলে, মোবাইল কেড়ে চলতে থাকে অকথ্য অত্যাচার। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে সমস্ত ঘটনা। অথচ এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আক্রান্ত শিক্ষককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে খবর।