ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও সত্য়জিৎ বৈদ্য়, কলকাতা:  নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় প্রোমোটার অয়ন শীলকে ( Ayan Shil )  গ্রেফতার করেছে ইডি ( ED ) । তবে টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রির অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছিল চার বছর আগেই। ২০১৯ সালে চুঁচুঁড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন একাধিক প্রার্থী। তখন থেকেই কি অয়নের মাথায় প্রভাবশালীদের হাত? নাহলে অভিযোগ সত্ত্বেও এই কারবার তিনি চালিয়ে গেলেন কীকরে? উঠছে সেই প্রশ্ন।


কোটি কোটি টাকার নোটের বান্ডিল, থেকে হাজার হাজার টাকার গয়না, আর এবার থরে থরে সাজানো OMR শিট! নিয়োগ দুর্নীতির পরতে পরতে যত রহস্য় সামনে আসছে, ততই হতবাক হচ্ছে বঙ্গবাসী! একের পর এক রহস্য়ময়ী নারী-বান্ধবী-গাড়ি-বাড়ি-কোটি কোটি টাকা কী নেই!


আর এই আবহেই এক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে স্কুল থেকে পুরসভার মতো বহু নিয়োগ দুর্নীতিতেই, বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীলের যোগের তথ্য় মিলেছে বলে ইডি সূত্রে দাবি! কিন্তু, এই কারবার তিনি কতদিন ধরে চালাচ্ছিলেন?  তা নিয়েই এবার সামনে এসেছে চাঞ্চল্য়কর তথ্য়! চুঁচুঁড়ার বাসিন্দা এক আইনজীবীর দাবি, বিভিন্ন জায়গায় অয়ন শীলের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। তা-ও একটা দুটো নয়, অয়নের বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় এরকম ৬টা মামলা রয়েছে বলে তাঁর দাবি।


২০১৯ সালে চুঁচুঁড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মল্লারপুরের বাসিন্দা সফিরুল শেখ, বলাগড়ের বাসিন্দা উদয় সরকার এবং কলকাতার মানিকতলার বাসিন্দা এক তরুণী। প্রত্য়েকেরই অভিযোগ ছিল সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছিলেন অয়ন শীল। কিন্তু, পরে চাকরিও হয়নি, টাকাও ফেরত মেলেনি। এই সব অভিযোগের ভিত্তিতে অয়ন শীলের বিরুদ্ধে  ৪২০ ধারায় প্রতারণা, ৪০৬ ধারায় বিশ্বাসভঙ্গ, ১২০ বি ধারায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের হয়। 


পুলিশ সূত্রে খবর, কোনও মামলায় অয়ন শীল গ্রেফতার হননি। প্রত্য়েকটা মামলায় তিনি আগাম জামিনে আছেন। আইনজীবী  মৃন্ময় মজুমদার দাবি করেন, ' অয়ন শীলের বিরুদ্ধে চুঁচুড়া, ব্য়ান্ডেল, নদিয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় সরকারি চাকরির নামে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। ৬টা মামলা চুঁচুঁড়া থানায় রেজিস্টার্ড। সব সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা। একটা মামলাও ঠিকভাবে তদন্ত হয়নি। গ্রেফতার হয়নি। হলে এই অবস্থা হত না '


চার বছর আগে থেকেই কি অয়ন শীল চাকরি বিক্রির কারবার ফেঁদে বসেছিলেন? তখন থেকেই কি তাঁর মাথায় প্রভাবশালীদের হাত? নাহলে অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও এতদিন ধরে এই কাজ তিনি করছেন কীভাবে? উঠছে প্রশ্ন।