কলকাতা: আর বাকি পাঁচটা সিদ্ধান্তর মতো স্বাভাবিক বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত। দুটো মানুষ পরস্পরের সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত যেমন নিতে পারেন, তেমনই বিপরীতটা করার সমস্ত অধিকার রয়েছে তাঁদের। তবে ইতিমধ্যেই যে দম্পতির জীবনে সন্তান এসে গিয়েছে, দেখা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিচ্ছেদে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় সে। দেখা গিয়েছে, ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত সন্তানের মানসিক এবং শারীরিক ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, সে বয়স যাই হোক না কেন। তবে প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের চেয়ে শিশুমন এই পরিস্থিতিতে বিচলিত হয় বেশি। বাবা-মায়েরা কিছুক্ষেত্রে সন্তানের কথা ভেবে পিছিয়ে আসেন, আবার কিছুক্ষেত্রে সন্তানকে উপেক্ষা করেই বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন। তবে দু-ক্ষেত্রেই পরিণতি খারাপ হতে পারে। তাই এই সময়ে বাবা এবং মা-কে সন্তানের প্রতি অনেক বেশি যত্নশীল হতে হবে। 


ডিভোর্স একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে সন্তানের প্রতি যত্নশীল হবে রইল বিশেষজ্ঞদের কয়েকটি পরামর্শ



  • আপনার সন্তান চায় ভালবাসা পেতে। তাই নিজেদের সম্পর্কের সমীকরণ যাই হোক না কেন, সন্তানের প্রতি ভালবাসার কোনও ঘাটতি হতে দেবেন না।  

  • খেয়াল রাখুন আপনার সন্তান যেন কোনওভাবেই নিজেকে আপনাদের বিচ্ছেদের কারণ মনে না করে। এ ক্ষেত্রে সন্তান নিজেকে দোষারোপ করতে পারে এবং তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। তাই এই সময়ে ওর সঙ্গে আলোচনা করে বুঝিয়ে দিন, কোনওভাবেই ও আপনাদের বিচ্ছেদের কারণ নয়।

  • সন্তানের সামনে ঝগড়া করবেন না। আইনি জটিলতার কোনও আলোচনাও তাঁর সামনে না করাই ভাল  বরং ওর সামনে নিজেদের মধ্যে বন্ধুসুলভ আচরণ বজায় রাখুন।

  • আপনার ছেলে বা মেয়ের থেকে কিছু লুকোবেন না। ওকে খোলাখুলি সবটা জানান, আলোচনা করুন। আপনার সঙ্গীকেও একই পরামর্শ দিন। ওর মতামতও শুনুন। যদি ওর কথা আপনাদের মনের মতো নাও হয় সে ক্ষেত্রেও কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানাবেন না। মনে রাখবেন, সন্তানের কাছে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ সর্বাধিক জটিল পরিস্থিতি।  

  •  এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে ওকে সময়দিন। কোনও ভাবেই ওর ওপর কোনও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবেন না। ওর থাকার জায়গাতে হঠাৎ বদল না আনাই ভাল। বাবা অথবা মা যাঁকেই বাসস্থান পরিবর্তন করতে হোক না কেন, ওকে বেছে নেওয়ার অধিকার দিন। কারণ হঠাৎ অভ্যাসের বদল আপনার জন্য ভাল নাও হতে পারে।

  • বিচ্ছেদের পরেও সন্তানকে একই ভাবে সময়দিন। খেয়াল রাখুল বাবা এবং মা উভয়ের ভালবাসা থেকে আপনার সন্তান যেন বঞ্চিত না পায়। অন্যথায় পরবর্তীতে ওর মনে ভয়, উদ্বেগ, শূন্যতার সৃষ্টি হতে পারে। প্রয়োজন হলে কোনও কফিশপে একসঙ্গে খানিক্ষণ সময় কাটাতে পারেন। সেখানে ওকে নিয়ে আলোচনা করুন। সর্বপরি ওকে অনুভব করান যে আপনি এবং আপনার সঙ্গী একইভাবে ওর সঙ্গে রয়েছেন। স্বামী-স্ত্রী হিসেবে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও, মা-বাবা হিসেবে সঙ্গে থাকুন।