প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতি ( Recruitment Scam )  মামলায় আদালতে পেশের আগে এবার  বিস্ফোরক দাবি করলেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ( Shantanu Banerjee ) । তাঁর দাবি, 'এই কেসের মাস্টারমাইন্ড কুন্তল ( Kuntal Ghosh )  ...মিথ্যা অভিযোগ করে ভুলপথে সবাইকে চালনা করার চেষ্টা করছে কুন্তলই'। শান্তনুর দাবি, 'ওর টাকাগুলো অন্য রাজ্যে পাঠাচ্ছে, অন্যদিকে পাঠাচ্ছে। কারও নির্দেশে টাকা দেওয়া হয়নি, মিথ্যা কথা বলছে কুন্তল। আমি কোনও কিছুতে জড়িত নই, আগামীদিনে প্রমাণ হবে' দাবি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত অভিযুক্তের । 


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে সোমবার ফের আদালতে পেশ করল ইডি। সূত্রের খবর তার আগে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায় এবং তাঁর আত্মীয়দের নামে কী সম্পত্তি আছে রেজিস্ট্রি অফিসের কাছে জানতে চাইছে ইডি। শান্তনুর প্যান নম্বর এবং নাম দিয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে জানতে চাওয়া হয়েছে । শান্তনু কোনও তথ্য গোপন করছেন কিনা সেটা জানতেই এই উদ্যোগ বলে খবর ইডি সূত্রে। শান্তনুর বাজেয়াপ্ত করা দুটি মোবাইল থেকেও মিলেছে নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু তথ্য। সূত্রের দাবি, একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে চ্যাট করেছেন শান্তনু। মোবাইলের গ্যালারিতেও মিলেছে নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য এবং সম্পত্তির হদিশ। এই তথ্যগুলি সামনে রেখেই আজ শান্তনুকে জেরা করা হবে বলে ইডি সূত্রে খবর। 


সূত্রের খবর, প্রাসাদোপম বাড়ি, অভিজাত আবাসনে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, হোম স্টে, রিসর্ট, রেস্তোরাঁ, ধাবা-সহ শান্তনুর যে বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলেছে সেই সংক্রান্ত তথ্য আদালতে তুলে ধরা হবে। ইডি-র দাবি, কুন্তল ঘোষের সঙ্গে যোগসাজশে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া ছাড়াও শান্তনু নিজেও চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তুলেছেন। ইডি-র অনুমান, নিয়োগ দুর্নীতির টাকাতেই সম্পত্তি বাড়িয়েছেন যুব তৃণমূল নেতা। সূত্রের খবর, এইসমস্ত তথ্য আজ আদালতে পেশ করে শান্তনুকে ফের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে ইডি।


গত ২০ জানুয়ারি শান্তনুর বলাগড়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে, ৩১২ জন চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা উদ্ধার করেছিল ED।  কেন্দ্রীয় এই এজেন্সি সূত্রের আরও দাবি, শুধু, ঘুষের বিনিময়ে চাকরি দেওয়াই নয়, শান্তনুর বাড়ি থেকে সরকারি কর্মীদের বদলির সুপারিশের চিঠিও উদ্ধার হয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের থেকে অবৈধভাবে টাকা নিয়ে, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে পৌঁছে দিতেন কুন্তল ঘোষ। আদালতে দেওয়া রিমান্ড লেটারে এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছে ED। তাদের আরও দাবি, জেরা শান্তনু স্বীকার করেছেন, স্কুলের চাকরি পেতে তৃণমূলের অনেক নেতার হাতে, নথি পৌঁছে দিতেন দলেরই নিচুনতলার সদস্যরা।