কলকাতা: জল্পনার অবসান।অবশেষে তৃণমূলে ফিরলেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। তৃণমূল ভবন থেকে সোজা গেলেন কালীঘাটে শোভন-বৈশাখী, স্বাগত জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন, তৃণমূলে ফিরলেন শোভন, বললেন, 'আমার ধমনী, শিরায়..'
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমি মনে করি গণতন্ত্রে যে কোনও রাজনৈতিক দল, কে কোন রাজনৈতিক দল ধরবে, সেটা বেছে দেওয়ার অধিকার সবার রয়েছে। এবং মধ্যখানে, কয়েকবছর যদিও তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন না, কিন্তু নিয়মিত দলনেত্রীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। আপনারাও তা দেখেছেন। এবং দলনেত্রীর অনুমোদনক্রমে, শোভনদা এবং বৈশাখীদি-দুজনকে ঘরে ফেরানো হয়েছে। সক্রিয়ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে কাজ করবেন। এবং আমি সকলের কাছে অ্যাপিল করব, জাতি-দলমত নির্বিশেষে ..যেভাবে আমাদের বাংলার প্রতি বিজেপি আঘাত হানছে। কেন্দ্রের বৈমাত্রিক সুলভ আচরণ-সহ ৫ বছর ধরে আঘাত, বাংলার প্রতি অপমান, বাংলাকে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া, এই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়তে হবে।....যারা বাংলার মানুষের ভোট নিয়ে বাংলাদেশি বলে, তার বিরুদ্ধে লড়াইটা খালি তৃণমূলের নয়। সেই লড়াইটা আপামোর জনগণের, ১০ কোটি বঙ্গবাসীর। '
মুখ্যমন্ত্রীর বরাবরের ঘনিষ্ঠ শোভন চট্টোপাধ্যায়! ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিচেন ক্যাবিনেটের সদস্য! কলকাতার মেয়রের পাশাপাশি রাজ্য় সরকারের একাধিক দফতরের মন্ত্রী ছিলেন তিনি। ছিলেন ফিশারি সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানও।কিন্তু, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে, বিজেপি প্রায় তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলার পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। শুরু হয় তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক! সেই সময় বিজেপিতে যোগ দেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ও। মেয়র-মন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে, দিল্লিতে গিয়ে বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গে যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে।
কিন্তু সুসম্পর্ক বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। শুরু হয় অভিমানের পালা। ক্ষোভ-বিক্ষোভ! বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে দেখা যেতনা শোভন-বৈশাখীকে।উল্টে কখনও ভাইফোঁটায় মুখ্য়মন্ত্রীর বা়ড়িতে কখনও নবান্নেকখনও আবার কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে দেখা যেতে শুরু করে তাঁদের। এরপর চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।তারপর, বিমান ধরে উত্তরবঙ্গে পৌঁছে যান শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। সেখানে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। আর তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই প্রশাসনে কামব্য়াক! একেবারে কলকাতার পাশে NKDA-র চেয়ারম্য়ান করা হয় শোভন চট্টোপাধ্য়ায়কে।এরপর সোমবার, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূলের ফিরলেন তিনি।