কলকাতা : কোথাও BLO-র বিরুদ্ধ নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ! কোথাও আক্রান্ত BLA, কোথাও সব পুড়ে যাওয়ায় কোনও নথি নেই বলে দাবি। কোথাও শ্বশুরকে বাবা দেখিয়ে SIR ফর্ম পূরণের অভিযোগ। তো কোথাও আবার তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষ। নানা দিকে নানা কাণ্ড! এরইমধ্য়ে রাজ্য়ের নানা প্রান্তে BLO-রা এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি! আর এই BLO-দের সিংহভাগই শিক্ষক-শিক্ষিকা! আর তাই শুরু থেকেই অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, সবাই এসআইআর-এর কাজ করলে পড়াশোনার কী হবে? কে পড়াবে?
আরও পড়ুন, রাজ্য সঙ্গীত গাইতে হবে স্কুলে স্কুলে, নির্দেশ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের, 'বাংলার মাটি..'
উলুবেড়িয়ার পূর্ব তপনা প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক প্রভাস পাখিরা বলেন, ;'আমরা বর্তমানে ৪ জন আছি। ৪ জনকেই BLO-র কাজে নিযুক্ত করেছে। নভেম্বর চলছে।মাস পেরোলেই অ্যানুয়াল পরীক্ষা! তার আগে SIR-এর কারণে পঠন-পাঠন কার্যত শিকেয় ওঠার জোগাড় হাওড়ার উলুবেড়িয়ার পূর্ব তপনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কারণ এই স্কুলের সব শিক্ষককেই BLO-র দায়িত্ব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এনুমারেশন পর্বের জন্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে এক মাসের সময়!'অন্যদিকে, পরীক্ষার আগে পড়ুয়াদের সিলেবাস শেষ করার চাপ রয়েছে। সবমিলিয়ে এখন শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
উলুবেড়িয়া পূর্ব তপনা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষিকা টুম্পা দাস বলেন,'স্কুল চলাকালীন জিপি থেকে ফোন করা হল। ফর্ম আনতে যাওয়ার জন্য। টিফিনের পর বাচ্চাদের ছুটি দিয়ে দিলাম। ছুটি দিয়ে ফর্ম বিলি করতে চলে গেলাম। পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। বাচ্চাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। সামনে পরীক্ষা। কীভাবে কী করব, চিন্তার মধ্যে আছি। চার জন টিচারই আলোচনা করছি যে কীভাবে কী করব।'
নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পূর্ব তপনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১০২ জন। আর শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৪। এই চারজনকেই BLO হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে ভোটের কাজ করার জন্য অধিকাংশ দিনই টিফিনের পড়ে ছুটি দিয়ে দিতে হচ্ছে। ফলে ক্ষতি হচ্ছে পঠনপাঠনে। এমনই দাবি পড়ুয়াদের।
উলুবেড়িয়া পূর্ব তপনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুইটি মালিক বলেন, 'টিফিন বেলায় ছুটিও হয়ে যাচ্ছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে পরীক্ষা। ডিসেম্বরে পরীক্ষা। আমরা চাইছি স্কুল চলুক।' উলুবেড়িয়া পূর্ব তপনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সানিকা খাতুন বলেন, 'আসছে, টিফিনের পর চলে যাচ্ছে। ভোটের কাজের জন্য। মাস্টার মশাইরা বলছেন যে, তোমাদের এখন ঠিকমতো কাজ হবে না। কারণ আমাদের ভোটের কাজ দিয়েছে।' ঠিকমতো পড়া হচ্ছে না। ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধার কথা মেনে নিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
উলুবেড়িয়ার পূর্ব তপনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাস পাখিরা বলেন, 'ঠিকমতো ক্লাস করতে পারছি না। বাচ্চাদের একটু অসুবিধা হচ্ছে। টিফিনের পরে প্রতিদিন ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যেমন করে হোক আমাদের সিলেবাস করতে হবে। ফাইনাল পরীক্ষা নিতে হবে বাচ্চাদের। BDO অফিস থেকেই আমাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হয়েছে BLO-র কাজে। সার্কেল অফিসে SI-কে জানানো হয়েছিল। SI বলল এখন আমি কী করব। দেখছি কী করা যায়। '