রুমা পাল, সমীরণ পাল ও পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : খসড়া তালিকায় এখনো চূড়ান্ত অসঙ্গতি রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। বিশেষ করে এমন নাম বাদ দিয়েছে সেগুলো র কোন যৌক্তিক ব্যাখ্যা নেই। যেমন বেঁচে থেকেও মৃত ঘোষণা নির্বাচন কমিশনারের এস,আই, আর এর তালিকায়।নৈহাটি বিধানসভার অন্তর্গত পূর্ব জেঠিয়ার পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা সোমেশ্বর কর্মকার, বয়স ৬৭। তিনি ২০০২ সালে ভোট দিয়েছিলেন কিন্তু এবারের ভোটের তালিকায় তার নাম নেই তাকে মৃত বলে দেখানো হয়েছে। বিজেপি বলছে দোষ বিএলও-র।  

Continues below advertisement

আরও পড়ুন, যুবভারতীকাণ্ডে ধৃত শতদ্রু রিষড়ার বাড়িতে তল্লাশি, ২২ কোটি টাকা ফ্রিজ করল SIT

Continues below advertisement

জীবিত ভোটার রাতারাতি মরে 'ভূত'! বেঁচে থেকেও বেঁচে থাকার প্রমাণ দিতে হচ্ছে। খসড়া তালিকায় 'মৃত' বলে, নিজের সৎকার করতে শ্মশানে গিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর। কেউ আবার নিজের ডেথ সার্টিফিকেট তুলতে হাজির হন পুরসভায়। কেউ আছেন, কিন্তু 'নেই'! আর যাঁরা সত্যিই নেই, তাঁরা দিব্যি 'বেঁচে' আছেন ভোটার তালিকায়। ‘জীবিত ও মৃত’-র এই ভ্রান্তিবিলাসে ভূতের সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছে রাজ্যের খসড়া ভোটার তালিকা। তালিকা প্রকাশের পরই নজরে এসেছে এরকম অসংখ্য অসঙ্গতি। উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি বিধানসভার পূর্ব জেঠিয়ার বাসিন্দা সোমেশ্বর কর্মকার (৬৭)। বৃদ্ধের দাবি, ২০০২ সালের তালিকায় তাঁর নাম ছিল। বেশ কয়েকবার ভোটও দিয়েছেন।কিন্তু এবারের তালিকায় তিনি 'মৃত'! খসড়া ভোটার তালিকায় 'মৃত'  সোমেশ্বর কর্মকার বলেন, দেখছি, SIR-এ আমাকে মৃত বলে ঘোষণা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বলছে যখন মারা গেছে যখন, তখন ঘাটে চলে যাযই। সংসারে টাকা দিক। শ্মশানে চলে যাই!খসড়া ভোটার তালিকায় গরমিলের অভিযোগ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। 

নৈহাটি  তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সনৎ দে বলেন, মৃত এসেছে না, তাকে মৃত বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি সরকারের নরেন্দ্র মোদির কথায় নির্বাচন কমিশনার চলছে। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ বলে দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে দেড় থেকে ২ কোটি মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।  তাহলে তারা নাকি ক্ষমতায় আসবে। নির্বাচন কমিশনার ময়দানে নেমে যে মানুষগুলো হাঁটাচলা করে বেড়াচ্ছে, কাজ করছে- সেই মানুষগুলোকে মৃত ঘোষণা করে দিচ্ছে। ব্যারাকপুর প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ বলেন, প্রথম দিন থেকে এই সরকার মমতা ব্যানার্জির সরকার SIR নিয়ে বিরোধিতা করছে। এই যে লোকটা মারা গেছে জ্যান্ত থাকা সত্ত্বেও এই দোষটা কার? এটা তো BLO-র দোষ। BLO-টা কে বেশিরভাগ BLO এই রাজ্য সরকারের অঙ্গুলি হেলনে কাজ করছে। 

অন্যদিকে, খসড়া তালিকা বের হতেই আতান্তরে পড়েছেন বেহালার বাসিন্দা সুব্রত মিস্ত্রী।তিনি নিউ আলিপুরের সাহাপুর মথুরানাথ বিদ্যাপীঠের গ্রুপ C কর্মী। অভিযোগ, খসড়া তালিকায় বাদ পড়েছে তাঁর নাম। উল্টে নাম উঠেছে সোনারপুর উত্তরের বাসিন্দা আর এক সুব্রত মিস্ত্রীর। যিনি আদতে বাংলাদেশের নাগরিক। নাম, বাবার নাম, এপিক নম্বর - সব এক। আলাদা ছিল শুধু ঠিকানা আর ছবি। অভিযোগ, তার জেরেই বেহালার সুব্রত মিস্ত্রীর এনুমারেশন ফর্ম চলে গিয়েছিল সোনারপুরের সুব্রত মিস্ত্রীর কাছে।বেহালার বাসিন্দা সুব্রত মিস্ত্রী বলেন, খসড়া তালিকায় দেখতে পেলাম আমার নাম আসেনি। কীসের SIR? ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় আমার নাম রয়েছে। আমার বাবা-মায়ের নাম রয়েছে। ২০০২ সালের আগে আমার ভোটার কার্ড বানানো। সেই লোকটি যে বাংলাদেশ থেকে সে ওখানে বলল, স্বীকার করল আমি বাংলাদেশ থেকে ভোটার কার্ড বানিয়েছি, তার নাম নথিভুক্ত করা হল।   BLO  সমীরণকুমার রায় বলেন,ওঁর ফর্ম যেহেতু সাবমিট করা হয়েছে আর যখন এনুমারেশন ফর্ম এসেছিল আমার এখানকার সুব্রত মিস্ত্রীর ছবি ছিল। তার নামও ভোটার লিস্টে রয়েছে। ওইজন্য তাঁকে ফর্ম দেওয়া হয়েছে। ওটাই সাবমিট হয়েছে। তারজন্য খসড়া লিস্টে ওঁর নামটা রয়েছে।জীবিত ভোটার কীভাবে তালিকায় 'মৃত' হলেন তালিকায়? জানতে BLO-দের শোকজ করে নির্বাচন কমিশন। উত্তরও দিয়েছেন BLO-রা। কমিশন সূত্রে খবর, ওই সব উত্তর  জাতীয় নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে।