সুজিত মণ্ডল, কলকাতা : বিহারের পর পশ্চিমবঙ্গেও, এবার ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনের প্রস্তুতি একেবারে শেষ পর্যায়ে। আর এই আবহেই রাজনৈতিক তরজার কেন্দ্রে রয়েছে অনুপ্রবেশ ইস্যু। অনুপ্রবেশ ঠেকানো নিয়ে এবার রাজ্য় প্রশাসনের কোর্টেই বল ঠেলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ! এমনকী, অনুপ্রবেশকারী ঠেকাতে পশ্চিমবঙ্গে সোজা সরকার পরিবর্তনেরও ডাক দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, অনুপ্রবেশ ইস্যুতে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর মন্তব্যের পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূল থেকে সিপিএম-কংগ্রেস-ও।
আরও পড়ুন, ' তৃণমলের শত্রু তৃণমূলই..' ! TMC-র বিজয়া সম্মিলনীতেও অনুব্রত-কাজল সংঘাত, বিস্ফোরক মন্তব্য প্রকাশ্যে
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে হবে, দেশের প্রধানমন্ত্রী কে হবে, সেটা বিদেশিরা ঠিক করবে নাকি? ভোটার তালিকা থেকে ভূত তাড়াতে এখন চূড়ান্ত তৎপরতা। বিহারের পর পশ্চিমবঙ্গেও ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন অর্থাৎ SIR-এর প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই আবহে এরাজ্য়ে বাগযুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু উঠে আসছে অনুপ্রবেশ ইস্য়ু! একদিকে, অনুপ্রবেশকারী ইস্য়ুতে তৃণমূলকে নিশানা করছে বিজেপি।
অন্য়দিকে, মোদি সরকার অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্য়র্থ বলে অভিযোগ করছে তৃণমূল! সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে ফের অনুপ্রবেশ নিয়ে রাজ্য় প্রশাসনের ঘাড়ে দায় ঠেলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ!কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, সীমান্ত এলাকা পুরোপুরি ভাবে ফেন্সিং দিয়ে মুড়ে ফেলা সম্ভব নয়। সেখানে ২৪ ঘণ্টা নজরদারিও অসম্ভব। কিন্তু, অনুপ্রবেশকারীরা সীমান্ত পেরিয়ে প্রথমে কোথায় যায়? কোনও গ্রামে তো যায়। সেখানকার প্রশাসন জানে না, গ্রামে অচেনা ২৫ জন এসে থাকতে শুরু করেছেন? স্থানীয় থানার কাছে কোনও খবর নেই? পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূলও। এরপর পশ্চিমবঙ্গের নাম করে অনুপ্রবেশ ইস্য়ুতে সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন গুজরাতে অনুপ্রবেশ সমস্যা নেই? কেন রাজস্থানে নেই? কেন অসমে এই সমস্যা মেটানো গেছে? কারণ এই সব রাজ্যে বিজেপির সরকার আছে। অনুপ্রবেশ হচ্ছে, কারণ বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের প্রশাসন ও থানার কাছে নির্দেশ আছে, রেড কার্পেট পেতে অনুপ্রবেশকারীদের স্বাগত জানাতে হবে, ওরা ভোট দেয়। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্য়াণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, ২০১৪ থেকে তো ওর হাতে রয়েছে। ওর হাতে তো নির্বাচন কমিশন রয়েছে। করেছে কারা? BSF, CISF কার হাতে থাকে? তাহলে অমিত শাহ একটা অযোগ্য় মন্ত্রী। অমিত শাহ তাহলে একটা অযোগ্য় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যার সময়ে বিদেশিরা বাইরে থেকে ঢুকেছে।
অমিত শাহর মন্তব্য় নিয়ে সুর চড়িয়েছে সিপিএম-কংগ্রেসও। সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ২০২৪ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন অমিত শাহ। উনি কি বিদেশিদের ভোটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন? যাদের দ্বারা উনি নির্বাচিত হয়েছেন, সেই লিস্টটা ফেলে দিন। তারপরে কারা কারা বাড়তি অনুপ্রবেশকারী হল ধরে বের করে দিন। যা ওঁর করার কথা সেটা উনি করতে পারছেন না। সেটা মানুষের ঘাড়ে ফেলে দিচ্ছেন। অনুপ্রবেশে মদত দিচ্ছে কারা? অনুপ্রবেশে লাভ হচ্ছে কাদের? অনুপ্রবেশের দায় কার? তরজার মধ্য়েও, সেই প্রশ্নগুলো থেকেই যাচ্ছে।