আবির দত্ত, কলকাতা : নাম ভাঁড়িয়ে একমাস ধরে বাংলায় ঘাঁটি গেড়েছিল দুই সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গি ! নিউ দিঘার হোটেল থেকে তাদের পাকড়াও করেছে NIA। তাহলে কি সসন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠছে বাংলা? কোথায় নিরাপত্তা? প্রশ্ন উঠছে নানা মহল থেকে। এর মধ্যে আরও একটি চাঞ্চল্যকর সকলের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। কীভাবে এতগুলি আধার কার্ড নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল সন্দেহভাজন জঙ্গিরা ? কীভাবেই বা এরকম আধার কার্ড নিয়ে সকলের চোখে ধুলো দিয়ে কলকাতা শহরেই হোটেলের পর হোটেল বদলেছিল তারা ? 

NIA সূত্রে খবর, ১ মার্চ, ব্যাঙ্গালোরের রামেশ্বরম কাফেতে বিস্ফোরণকাণ্ডে অভিযুক্তরা ১০টিরও বেশি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেছে। তারপর ১ জন ধরা পড়লেও  চার রাজ্যে গা ঢাকা দিতে ব্যবহার করেছে একাধিক জাল আধার কার্ড। ভুয়ো পরিচয়পত্রের সংখ্যাটা ঠিক কত, সেগুলি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। কীভাবে চলছে এমন জাল আধার কার্ড তৈরি হচ্ছে ? এমন আর কত ভুয়ো আধারের সাহায্য নিয়ে নিজেদের লক্ষ্য চরিতার্থ করছে এরা ? 


NIA সূত্রে খবর, জঙ্গিদের আধার কার্ডে কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও মহারাষ্ট্রের ঠিকানা মিলেছে। তদন্তকারীদের অনুমান, জাল আধার কার্ডগুলি কর্ণাটকেই বানানো হয়েছিল। এমন কতগুলি আধার কার্ড জঙ্গিরা তৈরি করেছিল, জানতে চায় NIA। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, বেঙ্গালুরুতে বিস্ফোরণ ঘটানোর পর, ১ হাজার ৮৭৯ কিলোমিটার দূরে, বাংলাকেই সেফ প্লেস হিসেবে বেছে নিয়েছিল সন্দেহভাজন জঙ্গিরা। বিস্ফোরণের ১১ দিন পর কলকাতায় এসেছিল দুই মূল অভিযুক্ত। চেন্নাই থেকে ট্রেনে চড়ে তারা পৌঁছয় কলকাতায়। নাম ভাঁড়িয়ে কলকাতায় একের পর এক হোটেলে আস্তানা বদলেছে তারা। পুলিশ-গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দিয়ে আত্মগোপন করে ছিল শহরের বুকে। এরপর ২৮ মার্চ সেখান থেকে সোজা পাড়ি দিয়েছে বাঙালিদের অন্য়তম পছন্দের উইক এন্ড ডেস্টিনেশন দিঘা।  হাওড়া থেকে বাসে চেপে দিঘায় চলে যায়। তদন্তে এই তথ্যই মিলেছে বলে দাবি করেছে NIA।  


কলকাতা থেকে এসে নিউ দিঘার আয়ুষ ইন্টারন্য়াশনাল হোটেলে উঠেছিল ব্যাঙ্গালোরের রামেশ্বরম ক্যাফেতে বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্তরা। পুলিশের দাবি, ১০ এপ্রিল থেকে তারা এই হোটেলেই ছিল। NIA এবং সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স ব্যুরো-র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজ্য পুলিশ ও NIA যৌথ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের গ্রেফতার করে। 


তাহলে কোথায় সাধারণের নিরাপত্তা? সাধারণ মানুষের আশেপাশে তাঁরা থেকে গিয়েছে দিনের পর দিন। চাঁদনী চকি গিয়ে মোবাইল সারিয়েছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে একই ট্রেনে-বাসে সফর করেছে । যখন যেমন খুশি আধার ব্যবহার করেছে। তাহলে কোন ভরসায় সাধারণ মানুষ শহরে ঘুরবে ? কিংবা বেড়াতে যাবে জনপ্রিয় ভ্রমণকেন্দ্রে। ১ মাস ধরে শহরের বুকে লুকিয়ে রয়েছে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা, আর পুলিশ, গোয়েন্দাদের কাছে কোনও তথ্য় নেই?  


আরও পড়ুন:


যেমন-তেমন গান দিয়ে রিল বানালেই ফৌজদারি আইনে শাস্তি ! নিয়ম জারি এই বিখ্যাত মন্দিরে 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে