কলকাতা: প্রয়াত তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুনের (Bhadu Sheikh Murder) তদন্তও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (CBI) হাতে গেল।  শনিবার সিবিআই-এর হাতে তদন্তভার তুলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আদালত জানিয়েছে, রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি এবার তৃণমূল উপ প্রধান ভাদু শেখের খুনেরও তদন্ত করবে সিবিআই। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, ভাদু শেখের খুন ও বগটুই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। ভাদু শেখ খুনের তদন্তভার হাতে নিতে আপত্তি নেই বলে এর আগে জানিয়েছিল সিবিআই। 


দাবি মেনেই ভাদু খুনের তদন্তভার সিবিআই-কে


এ যাবৎ আদালতে ভাদু খুনের দায়িত্ব সিবিআই-এর হাতেই তুলে দেওয়ার দাবি উঠছিল। তার সপক্ষে যুক্তি ছিল, ভাদু শেখ খুন হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে জতুগৃহে পুড়িয়ে মারা হয় ন'জনকে। এই দুই ঘটনার মধ্যে সংযোগ রয়েছে বলে শুরু থেকেই অভিযোগ উঠছিল। তাই ঘটনার শিকড়ে পৌঁছতে হলে দুই ঘটনার তদন্তভারই নিতে হবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। সেই নিয়ে শুক্রবারও একদফা শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টে। শেষ মেশ শনিবার সিবিআই-এর হাতেই ভাদু খুনের তদন্তভার তুলে দিল আদালত। পাশাপাশি, আগামী ২ মে-র মধ্যে বগটুই হত্যাকাণ্ড ও ভাদু শেখ খুনের তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট একইসঙ্গে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। 


আরও পড়ুন: Jhalda Murder Update: তপন কান্দু খুনের ঘটনায় আজ ঝালদা থানার আইসিকে তলব সিবিআইয়ের। Bangla News


এ দিন আদালত জানিয়েছে, বগটুইয়ের হত্যাকাণ্ড এবং ভাদু খুন—একত্রে দুই ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই। প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বার করতে হবে তাদের। তাদের খুঁজে বার করে নিরপেক্ষতা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে গোটা ঘটনার তদন্ত সারতে হবে। শুরু থেকে মামলাকারীরা জানিয়ে আসছিলেন যে, দুই ঘটনার মধ্য যোগসূত্র ছিন্ন করতে তথ্য-প্রমাণ নষ্ট করা গতে পারে। এ ব্যাপারে রাজ্য পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। 


বালি-পাথর খাদানের বখরা নিয়ে খুন এবং প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার অভিযোগ


গত ২১ মার্চ রাতে রাস্তার ধারের দোকানে চায় খেতে গিয়ে খুন হন ভাদু। তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে একদল দুষ্কৃতী। ওই বোমার আঘাতেই মারা যান তৃণমূল পরিচালিক পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু। এর পর এক ঘণ্টাও কাটেনি, বগটুইয়ে পর পর বেশ রয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা সামনে আসে। তাতে শিশু-সহ আট জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় এক মহিলার। তার পর থেকেই দুই ঘটনার মধ্যে সংযোগের তত্ত্ব উঠে আসছিল। বালি-পাথর খআদানের বখরা নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকেই প্রথমে ভাদুকে খুন করা হয় এবং তার প্রতিহিংসা 


অন্যদিকে, নিহত তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখের রাজনৈতিক উত্থান ছিল নজরকাড়া। ভাদুকে প্রথমে লোকে চিনত থানার গাড়িচালক হিসেবে। সেখান থেকে থানার ডাক মাস্টার হন ভাদু। ১০ বছর আগে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য হওয়ার পর ৫ বছর আগে ভাদুকে উপপ্রধান করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ভাদু শেখ খুনে অভিযুক্ত সোনা শেখ, পলাশ শেখ, নিউটন শেখরা একসময় তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এদের বিরুদ্ধেই গত জানুয়ারি মাসে ভাদুর দাদা বাবর শেখকে খুনের অভিযোগ ওঠে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, বালি খাদান নিয়ে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছিল। তার জেরেই খুন হন ভাদু শেখ এবং পরবর্তীতে প্রতিহিংসা নিতে ন'জনকে পুড়িয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।