অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: ব্রিগেডে আজ লক্ষ কণ্ঠে গীতা (Gita Path in Kolkata) পাঠ হয়েছে, পড়া হয়েছে গীতার ৫টি অধ্যায়। শঙ্খধ্বনি ছাড়াও হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ব্রিগেডে উপস্থিত ছিলেন দ্বারকার শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতী, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দ্বৈতাপতি। গীতা পাঠে গলা মিলিয়েছেন ইমান আলি শেখ এবং ফরেজ লস্কররাও।
অনুষ্ঠানের আগে এবিপি আনন্দের প্রতিনিধি অর্ণব মুখোপাধ্যায় একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন দ্বারকা পীঠের শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতীর (Shankaracharya Swami Sadanand Saraswati)। গীতা পাঠের অনুষ্ঠান নিয়ে তিনি কী মনে করেন, সেটাই বলেছেন শঙ্করাচার্য। তিনি বলেন, 'কলকাতায় যা হচ্ছে তা ঐতিহাসিক।' গীতা পাঠ প্রতিদিনের জীবনের জন্যও প্রয়োজনীয় বলে তাঁর মত। দ্বারকা পীঠের শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতীর কথায়, 'গীতার পাঠ শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে দিয়েছিলেন। রথে ছিলেন অর্জুন আর শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন সারথি। আমাদের শরীরও রথ। এই রথের সারথি যদি আমরা নারায়ণকে বানিয়ে দিই। তাহলে আমাদের কখনও পতন হবে না। এটাই গীতার সার। এই শরীর রথ, পরমাত্মা তার রথী। আমাদের চেতনে-বুদ্ধিতে যদি শ্রীকৃষ্ণ বসে যান তাহলে আমাদের শরীর-মন সন্মার্গে চলে।'
এই অনুষ্ঠান থেকে যে বার্তা দেওয়া হবে, তা সারা বিশ্বের কাছে পৌঁছবেও বলে তিনি বলেছিলেন। মানুষের মধ্যে ভারতীয় সংস্কৃতির ভাবধারা যাতে জারি থাকে, তার জন্য গীতাপাঠ প্রয়োজনীয় বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এদিনের অনুষ্ঠানে আগাগোড়া ছিলেন দ্বারকার শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতী।
ব্রিগেডে শঙ্খধ্বনির সঙ্গে লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠের অনুষ্ঠানে এদিন পড়া হয়েছে গীতার ৫টি অধ্যায়। সকালে হয় কলস স্থাপন, হরিনাম সঙ্কীর্তন। ব্রিগেডে আশীর্বচন দিয়েছেন দ্বারকার শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতী। অনুষ্ঠান উপলক্ষে ব্রিগেডে তৈরি হয়েছিল দুটি ভাগে তৈরি বিশাল মঞ্চ। লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের জন্য ব্রিগেডকে ২০টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীর বার্তা:
ব্রিগেডে লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকলেও, বার্তা পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিশেষ বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এক লক্ষ মানুষের সমবেত গীতা পাঠের কর্মসূচি সত্যিই প্রশংসনীয়। পরম্পরা, জ্ঞান এবং দার্শনিক-আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার মেলবন্ধনই আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এই সাংস্কৃতিক বৈচিত্র ও সম্প্রীতি আমাদের শক্তি। মহাভারতের সময় থেকে স্বাধীনতা আন্দোলন, বর্তমান সময়েও গীতা সকলের অনুপ্রেরণা। আমি নিশ্চিত, একসঙ্গে এত মানুষের কণ্ঠে গীতা পাঠ আমাদের সামাজিক সম্প্রীতিকে আরও জোরদার করার পাশাপাশি, দেশের উন্নয়ন-যাত্রাকে শক্তি জোগাবে। উন্নত, শক্তিশালী, অনন্য ভারত গড়ে তোলার জন্য ২০৪৭ সাল পর্যন্ত সুযোগ আছে।' লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ উপলক্ষ্যে মোদির বার্তা এমনটাই।
আরও পড়ুন: 'গীতা পাঠের কর্মসূচি সত্যিই প্রশংসনীয়', বার্তা প্রধানমন্ত্রীর