কলকাতা: জো়ড়া খুন করে গা ঢাকা দিয়েছিল অভিযুক্ত। তবে কোনও গোপন ডেরায় নয়, একেবারে  খোলা রাস্তাকেই পুলিশের চোখে ধুলো দিতে বেছে নিয়েছিল সে। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হল না।   ফুটপাথে ভিখারির ছদ্মবেশ ধরে বসেও শেষ রক্ষা হল না। ৬ দিনের মাথায় উত্তর কলকাতার টালা থেকে গ্রেফতার হল ভাঙড়ে জোড়া খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সাট্টা কারবারি নেপ্তাউদ্দিন খান। 


গত ২৬ জুন  জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, সাট্টায় জিতে টাকা চাওয়ায় ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে শ্যালক লাল্টু মোল্লাকে কুপিয়ে খুন করে নেপ্তাউদ্দিন। ঘটনাটি দেখে ফেলায় ভাইপো রবিউল ইসলামকেও সে ছাড়েনি। অপরাধের সাক্ষীকেও সরিয়ে দেয় সে। রবিউল ইসলামকেও সে খুন করে বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, খুনের পর মহিলাদের পোশাক পরে এলাকা ছেড়ে পালায় নেপ্তাউদ্দিন। মোবাইল সঙ্গে নিয়ে যায়নি। ফলে মোবাইলের টাওয়ার ধরে তার হদিশ মেলার কাজটা করা যায়নি। তবে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে পুলিশ।


ভাঙড় থেকে পালিয়ে এসে ভিখারির ছদ্মবেশ ধরে ফুটপাথে বসতে শুরু করে।এরইমধ্যে সূত্র মারফৎ পুলিশ তার ফুটপাতে ঠাঁই নেওয়ার মেলে।  গতকাল টালা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ভাঙড়ের কাশীপুর থানার পুলিশ। এর আগে সাট্টা কারবারির স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আজ নেপ্তাউদ্দিনকে আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানাবে পুলিশ। এরপর জোড়া খুনের ঘটনার বিস্তারিত তদন্তের জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।


উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে  ভাঙড়ে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। রক্তে ভাসছিল দেহ।ঘরময় মাটিতে পড়েছিল চাপ চাপ রক্ত।লণ্ডভণ্ড হয়েছিল গোটা ঘর! বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ভাইপো ও শ্যালককে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় সাট্টা কারবারির বিরুদ্ধে। কাশীপুর থানার বানিয়াড়া এলাকায় এই  ঘটনা ঘটেছিল। মৃত্যু হয়েছিল রবিউল ইসলাম ও লাল্টু মোল্লার। ঘটনায় অভিযুক্ত নেপ্তাউদ্দিন খান এলাকায় সাট্টা এজেন্ট বলে পরিচিত।


মৃত লাল্টু মোল্লার পরিবারের অভিযোগ, নেপ্তাউদ্দিনের কাছে ১০ হাজার টাকা দিয়ে সাট্টা খেলেছিলেন লাল্টু। ৯০ হাজার টাকা জেতেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরেই সেই টাকা দাবি করছিলেন লাল্টু ।শনিবার রাতে ফোন করে লাল্টুকে বাড়িতে ডাকে নেপ্তাউদ্দিন। এরপর নিজের বাড়ির উঠোনেই লাল্টুকে কোপাতে থাকে সে।


অভিযোগ, লাল্টুকে খুন করার সময় দেখে ফেলায় এরপর রবিউল ইসলামকেও একইভাবে খুন করেন নেপ্তাউদ্দিন। আহত হন আরও কয়েকজন।কীভাবে নেপ্তার ঘর লন্ডভন্ড হল, ঠিক কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।