সন্দীপ সরকার ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: বহরমপুরে যাকে খুশি দাঁড় করান! হেরে গেলে রাজনীতি করাই ছেড়ে দেব! তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শখ থাকলে ডায়মন্ড হারবারে এসে লড়ুন না!বহরমপুরে তৃণমূল যাকে দাঁড় করাবে, তার কাছেই হারবেন! কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতাকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
২০২৪-এর লোকসভা মহারণে কি দেখা যেতে পারে এমন কোনও ডুয়েল? জল্পনা বাড়িয়ে বাগযুদ্ধে জড়িয়েছেন বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের দুই শরিক দলের অন্যতম নেতারা। ডায়মন্ড হারবার লোকসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কি প্রার্থী হবেন আইএসএফ-এর বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি? এই জল্পনার মধ্যেই
তরজার রেশ ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার থেকে ২৫২ কিলোমিটার দূরে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর পর্যন্ত!বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের শরিক কংগ্রেস আর তৃণমূল। জাতীয় প্রেক্ষাপটে এই দুই দলের রসায়ন যাই থাকুক, দুর্নীতির অভিযোগে এ রাজ্যে, তৃণমূলকে লাগাতার আক্রমণ বজায় রেখেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। উল্টোদিকে, তৃণমূলও অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিজেপির হাত শক্ত করার অভিযোগ বারবার তুলেছে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিজেপির সবচেয়ে বড় এজেন্টের নাম অধীর চৌধুরী।...দল বললে আমি বহরমপুর থেকে ভোটে লড়ব
১৯৯৯ থেকে ৫ বার, লাগাতার বহরমপুরে জিতেছেন অধীর চৌধুরী। আর তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ডায়মন্ড হারবারের ২ বারের সাংসদ। ২০১৯-এ সাংগঠনিক শক্তিতে ভর করে রেকর্ড ব্যবধানে ডায়মন্ড হারবারে জয় পান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল আর বিজেপি, দুই প্রধান শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে বহরমপুরে ফের জয়ী হন অধীর চৌধুরী। তাঁর নেতৃত্বেই একসময় মুর্শিদাবাদ হয়ে উঠেছিল কংগ্রেসের কেল্লা। কিন্তু, ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের পরে তৃণমূলের ধারাবাহিক দল ভাঙানোর জেরে নবাবের জেলায় ক্রমশ দুর্বল হয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু, বহরমপুরে এখনও অটুট অধীর ম্যাজিক! গত লোকসভা ভোটেও যে নমুনা দেখতে পেয়েছিল বাংলা। এই প্রেক্ষাপটেই আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বহরমপুর আর ডায়মন্ড হারবার নিয়েই চ্যালেঞ্জ, পাল্টা চ্যালেঞ্জের পর্ব শুরু হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেত্রী সনিয়া গাঁধী, সর্বভারতীয় নেতা রাহুল গাঁধী, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতা চাইবেন ইন্ডিয়া জোটে, বিজেপিকে হারানোর জন্য। আর এ রাজ্যে অধীর চৌধুরীরা, তারা বিজেপির দালালি করবেন, ভোট কাটার খেলা খেলবেন, কুৎসা করবেন। অত বড়বড় কথা না বলে, যাকে আক্রমণ করছেন, ক্ষমতা থাকলে, তাঁর কেন্দ্রে এসে লড়ে দেখান না। আপনি আগে গিয়ে সনিয়া গাঁধীকে রিকোয়েস্ট করুন, যে আমার সিটটা কীভাবে আমি বাঁচাই, আমি এখন ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি তৃণমূলের কাছে, আর খারাপ কথা বলব না। এ ছাড়া ওঁর বাঁচার কোনও রাস্তা নেই।
বহরমপুরের সাংসদ ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায়, আরে আমি তো খোলা আকাশ! আলিঙ্গন করতে চাইছি। খোকাবাবু, তার পিসি, সব চলে আয়। আর আমি হারি, রাজনীতি করাই ছেড়ে দেব।
সাগরদিঘি উপনির্বাচনে তৃণমূল হারিয়ে জিতে আসা বায়রন বিশ্বাসের দলবদলের পরে, গোটা মুর্শিদাবাদ জেলায় এখন আর কংগ্রেসের একজনও বিধায়ক নেই। জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ - এই দুই লোকসভা কেন্দ্রও তৃণমূলের দখলে।কংগ্রেসের সবেধন নীলমণি বলতে রয়েছে শুধু বহরমপুর। এই প্রেক্ষাপটেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে দুই হেভিওয়েটের তরজায় তপ্ত রাজ্য-রাজনীতি