শিলিগুড়ি : "বাংলায় যে ভালবাসা পেলাম, সম্ভবত কোনও প্রদেশে পাইনি।" I.N-D.I.A ব্লকে তৃণমূলের সঙ্গে টানাপোড়েনের আবহে, এমনই মন্তব্য করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। এত ভালবাসা দেওয়ার জন্য তিনি কর্মী-সমর্থকদের ধন্যবাদ জানান।
বাঙালির মেধার প্রশংসা করেন কংগ্রেস সাংসদ। টানেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ও বিবেকানন্দের কথা। জোট নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই শিলিগুড়িতে ন্যায় যাত্রা থেকে রাহুল বলেন, "যখন ইংরেজের বিরুদ্ধে লড়াই চলছিল, তখন ইংরেজের বিরুদ্ধে আদর্শগত লড়াই করেছিল বাঙালিরা। এর অর্থ, আপনার বিদ্বজন। আপনারা চিন্তাভাবনা করেন। আপনারা একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে চলতে পারা মানুষ। যেহেতু, আপনারা বাঙালি, তাই আপনাদের দায়িত্ব দেশকে পথ দেখানো। আপনারা যদি দেশকে পথ না দেখান, তাহলে দেশ আপনাদের ক্ষমা করবে না। বাংলার প্রত্যেকের মধ্যে আগুন আছে। ছোট ছোট বাচ্চার মধ্যেও। তাই আপনাদের সবার দায়িত্ব, ঘৃণার বিরুদ্ধে আপনাদের লড়তে হবে। আপনাদের মধ্যে যে ইন্টেলেকচুয়াল ক্ষমতা আছে, তা দিয়ে ভারতকে জুড়তে হবে।"
দু’দিন বিশ্রামের পর, বাংলায় ফের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু করছেন রাহুল গান্ধী। এদিন সকালে, জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর মোড় থেকে শুরু হয় রাহুলের যাত্রা। হুড খোলা গাড়িতে চেপে জনসংযোগ করেন তিনি। গাড়িতে বেশ কিছুটা পথ রাহুলের সঙ্গী ছিলেন অধীর চৌধুরী। এরপর শিলিগুড়িতে হুডখোলা জিপে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখেন কংগ্রেস সাংসদ। বক্তব্যের গোড়াতেই রাহুল শিলিগুড়ির নাম মুখে আনায় উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। পাল্টা ধন্যবাদ জানিয়ে রাহুল বলেন, 'আমি বললামই না। আর আপনারা মহব্বতের দোকান খুলে দিলেন। তাও আবার ফ্রিতে। একেবারে মন খুলে।'
এরপর একের পর এক ইস্যুতে বিঁধলেন মোদি সরকারকে। রাহুল বলেন, "দিল্লিতে যে সরকার আছে, তারা পুরো কাজ উদ্যোগপতিদের জন্য করে। বিমানবন্দর, বন্দর, পরিকাঠামো, বিদ্যুৎ-সহ সবকিছু দুই-তিন জন বড় লোকের হাতে যাচ্ছে। যদি কোনও মেকানিক ভাবেন যে আমি গাড়ি বানাতে চাই, নিজের কোম্পানি খুলতে চাই বা এমন কোনও যুবক যে গরিব, কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার হতে চান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি খুলতে চান, তাঁদের সবার জন্য দরজা বন্ধ।"
এরপর সঙ্গে থাকা গাড়ি প্রসঙ্গ টেনে রাহুলের সংযোজন, "এই টয়োটা গাড়ির মালিক জাপানের মেকানিক ছিলেন। তিনি কাজ শুরু করেন। এরপর আস্তে আস্তে এই টয়োটা কোম্পানি খুলেন। কিন্তু, ভারতে কোনও মেকানিক এই স্বপ্ন দেখতে পারবেন না। যদি কোনও মেকানিক এই স্বপ্ন দেখেন, তো অন্যরা তাঁকে নিয়ে মজা করবে। কিন্তু আমরা চাই, এদেশের মেকানিক, গরিব কৃষক কোনও স্বপ্ন দেখুন। এমন দেশ আমি চাই। কিন্তু, আজকাল যে দালালি করেন তাঁর ইজ্জত আছে, কিন্তু যে কাজ করেন তাঁর সম্মান নেই।"