অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার : রাহুল গান্ধীর 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'র রোড-শো কর্মসূচীতে অসন্তোষ আলিপুরদুয়ার জেলা কংগ্রেসের। 'ন্যায় যাত্রায়' চা বলয় ব্রাত্য থাকায় আক্ষেপের সুর জেলা কংগ্রেসের। কটাক্ষ তৃণমূল-বিজেপির।
জেলা কংগ্রেস সূত্রে খবর, রাহুল গান্ধীর 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'-র রোড-শো অসম হয়ে বাংলার কোচবিহার থেকে আলিপুরদুয়ার জেলায় প্রবেশ করবে আগামী ২৫ জানুয়ারি। সেদিন কোচবিহার জেলার শেষ প্রান্তে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে বরণ করে নেবে আলিপুরদুয়ার জেলা কংগ্রেস। সেখান থেকে রাহুল গান্ধী যাত্রা শুরু করে পৌছে যাবেন আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা টাউন ক্লাব ময়দানে। জানা গিয়েছে, যাত্রা পথে অংশগ্রহণ করবে হাজার হাজার কংগ্রেস কর্মীরা। যাত্রাপথেই হবে জনসংযোগ।
যদিও পথসভার মতো কর্মসূচী এখনও নেই।তবে, ফালাকাটার টাউন ক্লাব ময়দানেই তিনি রাত্রিবাস করবেন বলে জেলা কংগ্রেস সূত্রে খবর। তবে, সেখানেই তিন রাত অর্থাৎ ২৫, ২৬ এবং ২৭ জানুয়ারি এই যাত্রার অবস্থান হবে বলে জেলা কংগ্রেস-সূত্রে খবর। তবে ততদিন রাহুল গান্ধী থাকবেন কিনা খবর নেই জেলা কংগ্রেসের। ২৮ জানুয়ারি এই যাত্রা জেলা ছেড়ে বেড়িয়ে যাবার কথা। সেই সূত্রেই জেলা কংগ্রেসের প্রস্তুতি সভা হল আলিপুরদুয়ার জেলা কার্যালয়ে।
তবে, রাহুল গান্ধীর এই কর্মসূচীর প্রস্তুতি নিয়ে গত শনিবার শিলিগুড়িতে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক কেসি বেনুগোপাল এবং রাজ্য সভাপতি অধির চৌধুরির নেতৃত্বে উত্তরবঙ্গের ৫ জেলাকে নিয়ে বৈঠক হয় বলে জানাযায়। যদিও সেখানে আলোচিত রাহুল গান্ধীর পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচী নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় জেলা কংগ্রেস। তবে কোচবিহার থেকে ফালাকাটা, এই যাত্রাপথে রাহুল গান্ধী জনসংযোগ করলেও নির্দিষ্ট কোনও পথসভার কর্মসূচীর খবর এখনও নেই জেলা কংগ্রেসের।
এমনকি জেলার চা বাগান এলাকায় রাহুল গান্ধীর,'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'-র রোড-শো জাতীয় কোনও কর্মসূচী না থাকায় হতাশ আলিপুরদুয়ার জেলা কংগ্রেসে। কারণ, বিজেপি-তৃণমূল চা বাগান নিয়ে শুধুই রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ তাঁদের। অথচ জেলার চা বলয়ের মানুষের সমস্যা নিয়েই আন্দোলন কংগ্রেসের। কংগ্রেসই একমাত্র সমাধান দিতে পারে। অথচ সেই চা বাগান এলাকায় জনদরদি রাহুল গান্ধীর যাত্রার কর্মসূচী না থাকায় আক্ষেপ এবং হতাশায় বলে দাবি জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বর। যদিও বিকল্প হিসেবে চা শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধি দলকে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করানো যায় কিনা তা নিয়ে প্রস্তাব রাখা হয়েছে বলে জেলা কংগ্রেস সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
রাহুল গান্ধীর এই কর্মসূচী নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক মৃদুল গোস্বামী বলেন, এর কোনও প্রভাব বাংলা বা উত্তরবঙ্গে পড়বে না। কারণ এখানে কংগ্রেসকে অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েই দেখতে হচ্ছে। তাছাড়া বাম আমলের একের পর এক বন্ধ চা বাগান খুলেছে মুখ্যমন্ত্রী। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি হয়েছে। ফলে চা বলয়ে কিছুই করতে পারবে না বলেই কর্মসূচী রাখেনি এবং তাদের মানসিক শক্তিও নেই বলে কটাক্ষ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের।
আরও পড়ুন, 'নেতাজির নামে রাজনীতি, জন্মজয়ন্তীতে মূর্তি পরিষ্কার করেনি..', মন্তব্য দিলীপের
একইভাবে গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা বিজেপিও। জেলা বিজেপির সহ সভাপতি জয়ন্ত রায় বলেন, ছত্রিশগড়, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের নির্বাচনে এই রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বেই কংগ্রেস হেরে আজ তাদের অস্তিত্ব গোটা দেশেই সংকটে। মানুষ এদের ত্যাগ করছে। রাহুল গান্ধী ৫ বছর এখানে পড়ে থাকলেও কোনও প্রভাব পড়বে না। এমনকি রাজ্য সরকারে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসেরই অস্তিত্ব আজ আলিপুরদুয়ারে সংকটের মধ্যে, বলে দাবি বলেন বিজেপি জেলা-সহ সভাপতির। পাশাপাশি রাম মন্দিরের বিরোধিতা কংগ্রেসকে আরও পেছনে ঠেলে দিয়েছে বলে দাবি তার।