কাতার: এএফসি এশিয়ান কাপ (AFC Asian Cup 2024) ফের হার ভারতের (Indian Football Team )। সিরিয়ার বিরুদ্ধে ১-০ গোলে হেরে যেতে হল সুনীল ছেত্রীর দলকে। এএফসি এশিয়ান কাপের (AFC Asian Cup 2024) সেমিফাইনালে জায়গা করে নিতে সিরিয়ার বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নিতেই হত ভারতকে। প্রথমার্ধে কোনও দলই গোল করতে পারেনি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে এগিয়ে যায় সিরিয়া। যেই গোল আর শোধ করতে পারেনি ভারতীয় দল। অন্যদিকে, সাত বছর পরে এএফসি এশিয়ান কাপে প্রথম কোনও ম্যাচ জিতল সিরিয়া।


গত ম্যাচের দলে তিনটি পরিবর্তন করে এ দিন প্রথম এগারো নামান ভারতের কোচ ইগর স্টিমাচ। নিখিল পূজারি, সুরেশ ওয়াংজাম ও অনিরুদ্ধ থাপার জায়গায় এ দিন দলে ছিলেন শুভাশিস বোস, দীপক টাঙরি ও লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতে।  


চতুর্থ মিনিটেই ডানদিক দিয়ে বল নিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে গোলে কোণাকুনি শট নেন নাওরেম মহেশ। কিন্তু গোলকিপার আহমাদ মাদানি তা ক্ষিপ্রতার সঙ্গে আটকে দেন। এর দু’মিনিট পরেই মাঝমাঠ পেরিয়ে মহেশ বল দেন মনবীরকে, যা নিয়ে এগোলে তিনি সুযোগ পেতে পারতেন। কিন্তু তিনি বলের নাগাল পাননি। ২৫ মিনিটের মাথায় গোলের সামনে পাঠানো মহেশের উড়ন্ত বলে ঠিকমতো হেড দিতে পারলে হয়তো গোল পেতেন সুনীল ছেত্রী। কিন্তু পারেননি। প্রথমার্ধের স্টপেজ টাইমে বক্সের বাইরে থেকে সুনীলের বাঁ পায়ের শট গোলের সামান্য বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়।  


ক্রমশ ম্যাচে ফেরে সিরিয়া এবং তাদের অ্যাটাকরারাও একাধিক সুযোগ তৈরি করে নেন। কিন্তু প্রতিবারই ভারতের ত্রাতা হয়ে গোলমুখী শট আটকে দলকে বাঁচান গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধু। প্রথমে সাত মিনিটের মাথায় পাবলো সাবাগের গোলমুখী হেড আটকান তিনি। ১৯ মিনিটের মাথায় ইব্রাহিম হেসারের দূরপাল্লার গোলমুখী শট বাঁ দিকে ডাইভ দিয়ে সেভ করেন গুরপ্রীত। ফিরতি বলে ফের শট নিলেও তা ব্লক করেন শুভাশিস। 


৩৯ মিনিটের মাথায় প্রথম গোলের সবচেয়ে কাছাকাছি চলে আসে সিরিয়া। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে গুরপ্রীতের পরপর দু’টি পাঞ্চ সিরিয়াকে প্রায় অবধারিত গোল থেকে বঞ্চিত করে। প্রথমটি বাঁ দিক থেকে নেন আম্মার রামদান ও দ্বিতীয়টি মারেন আল আজান। প্রথমার্ধের শেষ দিকে রীতিমতো আক্রমণের ঝড় তোলে সিরিয়া এবং তাদের আটকাতে নিজেদের উজাড় করে দেন ভারতীয়রা।


বিরতির পরে মহেশকে ছাড়াই খেলতে নামে ভারত। তাঁর জায়গায় নামেন উদান্ত আর সন্দেশ ঝিঙ্গনের জায়গায় নামেন নিখিল। অর্থাৎ, আক্রমণ ও রক্ষণ দুদিকেই পরিবর্তন হয়। তবে দুই দলই কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ে। কিন্তু ৬২ মিনিটের মাথায় আকাশ মিশ্রর পা থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে ভারতের বক্সের বাঁ দিক থেকে যে ক্রসটি তোলেন হেসার, তা দ্বিতীয় পোস্টের সামনে ঠিকমতো হেড করতে পারলে অবধারিত গোল পেতেন ওমর খ্রবিন। কিন্তু তাঁর হেড বারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ৬৭ মিনিটে বাঁ দিকে দিয়ে উঠে বক্সে ঢুকে সাইড নেটে বল মারেন রামাদান। এই সময় থেকেই গোল পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে তারা। 


৭৩ মিনিটের মাথায় ফের ভারতকে বিপদের হাত থেকে বাঁচান গুরপ্রীত। বাঁ দিক থেকে ওঠা আলা দালি কোণাকুনি শট প্রথমে চাপড় মেরে আটকান তিনি। ছিটকে সামনে চলে যাওয়া বলেরও দখল নেন তিনি। এই সময়ে প্রায় প্রতি মুহূর্তে মুহুর্মুহু আক্রমণে উঠতে শুরু করে সিরিয়া এবং তাদের আটকে রাখতেই ব্যস্ত ছিল ভারত। 


প্রবল চাপে থাকা ভারতের রক্ষণ শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে ৭৬ মিনিটে, যখন গোল করে দলকে এগিয় দেন পরিবর্ত ফরোয়ার্ড খ্রবিন। বক্সের বাঁ দিক থেকে হেসারের ক্রসে বল পেয়ে গোলে শট নেন তিনি, যা গুরপ্রীতের ডানদিকে মাটি ঘেঁষে গোলে ঢুকে যায় (১-০)। রাহুল ভেকে তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেও পারেননি। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটেও গোলের সামনে বল পেয়ে যান খ্রবিন। কিন্তু বলে পৌঁছতে পারেননি। 


এ দিন গ্রুপের অন্য ম্যাচে ১-১ ড্র করে অস্ট্রেলিয়া ও উজবেকিস্তান। তবে তাতে সাত পয়েন্ট নিয়ে এক নম্বর দল হিসেবে শেষ ষোলোয় যাওয়া আটকায়নি অজিদের। পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে পরের রাউন্ডে উঠল উজবেকিস্তান।                                  তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল মিডিয়া