অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: সন্ন্যাসীর অস্বাভাবিক মৃত্যু। ঘরের সামনে থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ। ঘটনার পর থেকে থমথমে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের (Bharat Sevashram Sangha) বালিগঞ্জের (Ballygunge) সদর কার্যালয়।


ঘড়ির কাঁটায় তখন ভোর ৪টে। মঙ্গল আরতির জন্য মূল মন্দিরে গিয়েছিলেন সন্ন্যাসীরা। ফিরে এসে তাঁদেরই এক প্রবীণ আবাসিককে নিজের ঘরের সামনে গ্রিল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন তাঁরা। স্বামী শুভরূপা নন্দ ওরফে প্রদ্যোৎ মহারাজ আদতে বাঁকুড়ার বাসিন্দা। প্রায় ৫০ বছর ধরে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।  (Bharat Sevashram Sangha Monk Death)         


বালিগঞ্জে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সদর কার্যালয়ে, চারতলার এই ঘরে থাকতেন স্বামী শুভরূপানন্দ। কীভাবে মৃত্যু হল তাঁর? ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ সূত্রে দাবি, গত দু'বছর ধরে শরীর ভাল যাচ্ছিল না প্রবীণ ওই সন্ন্যাসীর। অনিদ্রাজনিত অসুখে ভুগছিলেন।  ডিপ্রেসন থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই সন্ন্যাসী, অনুমান কর্তৃপক্ষের।     

আরও পড়ুন : 


কর্তব্য পালন থেকে পিছিয়ে এলেই পরিণাম ভয়ঙ্কর? গীতায় কী বলেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ?


      


ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ জানালেন, 'অনেকদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। ঘুম আসত না, রাতে হাঁটতেন। চিকিৎসা চলছিল। আজ এরকম হয়েছে। মনে হচ্ছে আত্মহত্যা।' আত্মহত্যা নাকি অস্বাভাবিক মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে অন্য কিছু? সত্তর বছরের সন্ন্য়াসীর মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।                 

সারা বছর নানা জনকল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত থাকে ভারত সেবাশ্রম। মঠের কর্মকাণ্ড ভারতের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্তরেও । জানা যায়, আচার্য শ্রীমত স্বামী প্রণবানন্দ প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনের শাখা প্রশাখা রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, কানাডা, ফিজি এবং বাংলাদেশে ছড়িয়ে। এই  শতাব্দীপ্রাচীন সংস্থাটি যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগেই ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেবামূলক কাজের জন্য বহু মানুষই এই সংগঠনের অনুগামী। কলকাতার বালিগঞ্জে এই সংস্থার মূল মঠ।  এই মঠেই এমন ঘটনা ভক্তদের মনে রীতিমতো নাড়া দিয়ে গিয়েছে।      

স্বামী শুভরূপানন্দের মৃত্যুতে স্তম্ভিত ভক্তরা। এমনভাবে চলে যাবেন প্রিয় মহারাজ ভাবেননি কেউই। ঘুম না আসা, রাতে হাঁটা, শরীর ও মন ভআল না থাকার সঙ্গে তাঁর মৃত্যু জড়িয়ে আছে কিনা ভেবে পাচ্ছেন না অনুগামীরা।   


আরও পড়ুন :


আত্মার মৃত্যু নেই, কাউকে মারেও না ! তাহলে হত্যাকারী কে ? কী বলেছিলেন কৃষ্ণ?