অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপির (BJP) নজরে গ্রাম বাংলার কৃষক ভোটব্যাঙ্ক। সবার মুখে খাবারের জোগান দেন যাঁরা, সেই অন্নদাতা কৃষকদের সহায়তায় কেন্দ্রীয় সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সেই তথ্য পৌঁছে দিতে এবার মাঠে নামতে চলেছে ভারতীয় জনতা কিষাণ মোর্চা। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলেও সুর চড়াচ্ছে তারা। 


প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (PM Awas Yajana), মিড ডে মিল (Mid Day Meal), ১০০ দিনের কাজ, বাংলার একাধিক সরকারি প্রকল্পের গতিপ্রকৃতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। তা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি সংঘাত লেগেই রয়েছে। 


শাসকদল তৃণমূল ও রাজ্য সরকারের অভিযোগ, বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলাকে আর্থিক বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। পাল্টা বিজেপি শিবিরের অভিযোগ, কেন্দ্রের প্রকল্প রাজ্যে সঠিক ভাবে রূপায়ণ করছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সরকার। উল্টে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিতে চলছে চুরি, তছরুপ, স্বজনপোষণ।


এমন একটা সংঘাতের আবহে, পঞ্চায়েত ভোটকে পাখির চোখ করে বাংলায় ঝাঁপাতে চলেছে বিজেপির কৃষক সংগঠন ভারতীয় জনতা কিষাণ মোর্চা। সম্ভবত ফেব্রুয়ারি থেকেই পথে নামতে চলেছে তারা। রবিবার হেস্টিংসে ছিল সংগঠনের প্রদেশ কার্যকারিণী বৈঠক।


বৈঠকে স্থির হয়েছে, বাংলায় কৃষকদের কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার দাবিকে সামনে রেখে পথে নেমে আন্দোলন হবে। জেলার পাশাপাশি কলকাতাতেও হবে আন্দোলন কর্মসূচি। 
নরেন্দ্র মোদির সরকার কৃষকদের সহায়তায় কী কী সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে, গ্রাম বাংলার কৃষক পরিবারগুলিকে সেই সম্পর্কে জানানো হবে।  


পঞ্চায়েত ভোটের আগে দিদির দূত কর্মসূচিতে গ্রামে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভ আর প্রশ্নের মুখে পড়ছেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। আবাস যোজনায় বাড়ি না পাওয়া বা বাড়ি পেতে বিলম্বের অভিযোগে, কেন্দ্রীয় সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলছেন তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়করা।  


এই আবহে রাজ্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলার কৃষকদের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে ভারতীয় জনতা কিষাণ মোর্চা। বিষয়টি নিয়ে কৃষকদের অবগত করার কথাও জানাচ্ছেন তাঁরা। 


ভারতীয় জনতা কিষাণ মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকারের কথায়, বাংলায় কৃষকরা বঞ্চিত। প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি। তিয়াত্তর লক্ষ কৃষকের পাওয়ার কথা। ৩০ লক্ষ পাচ্ছে। কেন পাবেন না? কেন সেচ ব্যবস্থা হয়নি যখন প্রধানমন্ত্রী সিঁচাই যোজনা রয়েছে। ধান কেনার নামে তৃণমূলের জোরাজুরি। ফলস অ্যাকাউন্ট খুলে মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস আত্মসাৎ করছে।


ফিরহাদ হাকিমের কথায়,ওদের বড় বড় নেতা এসেও কিছু করতে পারেনি। ওরা অনেক ছোট সংগঠন। ওরা আর কী করবে? গত বিধানসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনাকে ঘিরে তুঙ্গে পৌঁছেছিল কেন্দ্র-রাজ্য বিবাদ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের তা নিয়ে সুর চড়তে শুরু করেছে।