কলকাতা: ২৩ জানুয়ারি, ১৮৯৭, ভারত পেয়েছিল এক লড়াকু সন্তানকে। তিনি সুভাষ চন্দ্র বসু। ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসের এক গৌরবজ্জ্বোল নাম। তিনি সেই রাষ্ট্রনায়ক যিনি ব্রিটিশ শাসনকে রক্তচক্ষু দেখিয়ে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছিলেন দেশকে। আজ তাঁর ১২৭ তম জন্মদিবসে 'ব্যাটেল অফ কোহিমা'তে নেতাজির সেই লড়াইকে ফিরে দেখা যাক। 


নাগাল্যান্ডের কোহিমা জেলার কিগওয়েমা গ্রামে তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রেশ। কারণ জাপানি সেনারা এই পাহাড়ি গ্রামে এসে কোহিমার যুদ্ধে লড়াই করে চলেছিলেন। আসলে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের দামামার মধ্যেই জাপানের সাহায্য নিয়ে আজাদ হিন্দ ফৌজ বাহিনী এগিয়ে চলেছিল ভারত জয়ের লক্ষ্যে। ৪ এপ্রিল, ১৯৪৪ সালে শুরু হওয়া কোহিমার ৮০ দিনব্যাপী যুদ্ধে পরাজয় হলেও আজাদ বাহিনীর সংগ্রাম ছিল বীরত্বের। প্রকৃতপক্ষে কিন্তু কোহিমা থেকেই ভারতের বিজয় সূচক ইতিহাসের শুরু।                                              


১৯৪৪ সালের ১৪ এপ্রিল ছিল ইতিহাসের সেই বিশেষ দিন। বিকেল ৫ টার সময় ইম্ফল থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে মনিপুরের বিষ্ণুপুর জেলার মৈরাং অঞ্চলে সর্বপ্রথম ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে আজাদ হিন্দ বাহিনী। পাহাড় ঘেরা অঞ্চলে সূচনা হয় ভারতের বিজয় উৎসব।



কোহিমার যুদ্ধের সেই স্মৃতিচিহ্ন


 


আরও পড়ুন, 'কোনও সরকারই তাঁকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়নি, মোদিই সম্মান দিচ্ছেন', নেতাজির জন্মদিবসে মন্তব্য দিলীপের


গুয়াহাটির লেখক ও সাংবাদিক ডঃ সমুদ্র গুপ্ত কাশ্যপের মতে, রুজাজো নামের আরেকটি ছোট গ্রাম রয়েছে সেখানে। ১৯৪৪ সালে এপ্রিলে আজাদ হিন্দ ফৌজ বা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি কিন্তু সেই গ্রামটিকে ব্রিটিশদের কাছ থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছিল। স্থানীয় ইতিহাসবিদরা জানিয়েছেন, আজাদ হিন্দ সরকার বেশ কয়েক মাস এই গ্রামে তাঁদের শাসন জারি রেখেছিলেন। এখানে স্থানীয় যুবক ভেসুয়ি স্বুরোকেও দোভাষী হিসেবে সেই সময় নিয়োগ করেছিলেন নেতাজি। 


উল্লেখ্য, গত বছরের ৩ নভেম্বর জনপ্রিয় কিগওয়েমা গ্রাম পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। নেতাজির স্মৃতিধন্য গ্রামটি ঘুরে দেখে রাষ্ট্রপতি জানিয়েছিলেন বিখ্যাত নাগা গ্রামে এসে তিনি যেন ইতিহাসকে ছুঁয়ে দেখতে পেরেছেন। গ্রাম থেকে সেই সব ভাল স্মৃতি নিয়েই রাজধানীতে ফিরবেন তিনি। 


 



কোহিমার ইতিহাস ঘেরা স্থান ঘুরে দেখেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু


আজাদ হিন্দ বাহিনীর স্মরণে মৈরাঙে এখন বর্তমানে রয়েছে আই .এন. এর হেডকোয়ার্টার। যা মিউজিয়ামে রূপান্তরিত হয়েছে। রয়েছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি। ইতিহাসের পাতায় ১৫ অগস্ট স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলিত হলেও ভারতের বিজয় পতাকা প্রথম উত্তোলিত হয়েছিল মৈরাঙে। নেতাজির লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়ে ভারতের বীর সন্তানের স্মৃতি আজও বিদ্যমান সেখানে।