আশাবুল হোসেন , কলকাতা : দল বিরোধী কাজের জন্য সাসপেন্ড করা হল তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে। আজ সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করলেন ফিরহাদ হাকিম। দল জানাল, কোনওরকম সাম্প্রদায়িক উস্কানিকে দল প্রশ্রয় দেয় না। আগামী ৬ ডিসেম্বর হুমায়ুন কবীর মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদের শিলান্যাসের ডাক দিয়েছেন। দল এই বিষয়ে আগে কিছু না বললেও বরাবর ধর্ম নিরপেক্ষ থাকার বার্তা দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু নিজের অবস্থানেই অনড় থেকেছেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তিনি বলে গিয়েছেন, 'কাকে পাশে পেলাম, কাকে পেলাম না, সে বিষয়ে চিন্তিত নই'। গতকাল এই ভাষাতেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর । অবশেষে আজ, ৪ ডিসেম্বর , তৃণমূল হুমায়ূনকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়ে দিল। তবে এটাই প্রথম নয়, এর আগেও ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দল বিরোধী কাজের জন্য হুমায়ুন কবীরকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করে তৃণমূল কংগ্রেস।
এই ঘোষণার পরই কার্যত ফুঁসে ওঠেন হুমায়ুন। তিনি বলেন, ফিরহাদ হাকিমের কথার জবাব দেব না। আগামীকাল দল ছাড়ছি, ২২ তারিখ নতুন দলের ঘোষণা, জানালেন ভরতপুরের বিধায়ক। দুই ঘণ্টা পর যা জানানোর জানাব। এরপর এবিপি আনন্দ-র সঙ্গে সাক্ষাৎকারে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। আঙুল তোলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী মুসলিমদের মসজিদ করতে বাধা দিচ্ছে। সরকারি টাকায় ভুরি ভুরি মন্দির তৈরি হচ্ছে। নিউটাউনে ১১০০ কোটি টাকার জায়গায় মন্দির তৈরি হচ্ছে। কতদিন এই ক্ষমতা থাকে দেখব। আমার বিরুদ্ধে যা খুশি করে নিক মুখ্যমন্ত্রী, দেখে নেব'
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর, অযোধ্যায় ভেঙে ফেলা হয়েছিল বাবরি মসজিদ। আর, এ বছর ৬ই ডিসেম্বর, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার মির্জাপুরে নতুন বাবরি মসজিদের শিলান্য়াস করার ঘোষণা করেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সেই নিয়েই উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর সভার ২ দিন আগেই মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ-প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, এক বছর আগে থেকে বলেছি বেলডাঙার কোনও একটা জায়গায় আমি বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করব, তোদের গা জ্বলছে? তোরা বিজেপির দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিস?...আগুন নিয়ে খেলবেন না, চ্যালেঞ্জ থাকল আমার মুর্শিদাবাদের প্রশাসনকে'। এরপরই রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে রাজ্য সরকারকে পদক্ষেপ করতে বলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। প্রয়োজনে প্রশাসনকে আগাম সতর্কতামূলক গ্রেফতারির পরামর্শও দেন। এরপরই বৃহস্পতিবার সকালে হুমায়ুন কবীরকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। মুর্শিদাবাদে সভা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এখন সেই সভা থেকে হুমায়ুনের জন্য কী বার্তা দেন তৃণমূল দলনেত্রী, সেই দেখার।