পার্থপ্রতিম ঘোষ, পূর্ব মেদিনীপুর : ৪ দিনের মাথায় ভূপতিনগরে গেল ফরেন্সিক দল। মঙ্গলবার দুপুরে ফরেন্সিক দলের অফিসাররা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে গিয়ে তাঁরা প্রথম খতিয়ে দেখেন বিস্ফোরণের অভিঘাতে সেই বাড়ি থেকে জিনিসপত্রগুলি কোথা অবধি ছিটকে পড়েছে। প্রতিটি জিনিস তাঁরা খতিয়ে দেখেন। 


কী করল ফরেন্সিক দল 
ভূপতিনগরে পোড়া বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে, তার চারপাশ ঘুরে দেখেন। সংগ্রহ করেন নমুনা।  সোমবার যে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় তার জেরে মঙ্গলবার এলাকায় বসানো হয়েছে বিশাল পুলিশ পিকেট। শুক্রবার ওই বিস্ফোরণের পর বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মেলে তিনজনের দেহ। 


আরও পড়ুন: TMC: ‘দলের পুরনো কর্মীরা ভাল নেই’ বেসুরো রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, তৃণমূলে কোন্দল?


রাজকুমার মান্নার বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ কীভাবে ঘটে 


কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার আগে, শুক্রবার রাতে ভূপতিনগরের নাড়ুয়া বিরলা গ্রামে তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। উদ্ধার হয় তৃণমূল নেতা ও দুই তৃণমূল কর্মী লালু মান্না ও বিশ্বজিৎ গায়েনের ঝলসানো দেহ। রহস্য বাড়িয়ে তিনটি মৃতদেহ মেলে আলাদা আলাদা জায়গা থেকে। বিস্ফোরণের কারণ ও নেপথ্যে কারা রয়েছে, সে প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। 


রবিবার এই ঘটনা চাঞ্চল্যকর মোড় নেয়। বাড়িতে বাজি তৈরির সময়ই বিস্ফোরণ হয়, এই দাবি করে স্বামীর নামে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী। যদিও তাঁর আত্মীয় এবং প্রতিবেশীরা বলেন, তৃণমূল নেতার বাড়িতে বাজি তৈরি হত বলে তাঁরা কখনও শোনেননি! এই ইস্যুতে সুর চড়াচ্ছে বিজেপি। ঘটনা ঘটার পর অবশ্য এই কথা বলেননি তিনি। 


ঘটনা নিয়ে নানা মুনির নানা মত 


পুলিশ সূত্রের দাবি, নিহতের স্ত্রী দাবি করেন, তাঁদের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বাজি বানানো হত। তাঁর স্বামী রাজকুমার ছাড়াও লালু মান্না এবং বিশ্বজিৎ গায়েনও সেখানে বাজি বানাতেন। লতারানির দাবি, এই নিয়ে বারবার আপত্তি জানানো সত্বেও, স্বামী কর্ণপাত করেননি! শুক্রবার রাতে, বাজি তৈরির সময় কেউ ধূমপান করছিলেন। তারই ফুলকি গিয়ে পড়ে বারুদে। তা থেকেই এত বড় বিস্ফোরণ! যদিও, ভিন্ন দাবি করেছেন নিহত তৃণমূল নেতারই সঙ্গী বিশ্বজিৎ গায়েনের বাবা। তিনি বলেন, ' বাইর থেকে কেউ বোম ফেলেছিল কি না...বাইর থেকে লোক এসে হামলা করেছে...' 


শুধু তাই নয়, নিহতের আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের দাবি, রাজকুমার মান্নার বাড়িতে বাজি তৈরির কথা তাঁরাও কখনও শোনেননি! এখন, বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন, কীভাবে বিস্ফোরণ হল তৃণমূল নেতার বাড়িতে? সত্যিই বোমা বাঁধা হচ্ছিল সেখানে? না কি বাজি তৈরির কাজ চলছিল? যদি বাজিই তৈরি হয়, তা হলে গ্রামবাসীরা কখনও তা জানতে পারলেন না? এও কি সম্ভব? ফরেন্সিক দল এই সব প্রশ্নেরই জবাব খুঁজবে।