রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: ক্রেডিট কার্ড (Credit Card) নিলেও কীভাবে পেমেন্ট (Payment) করবেন সেই নিয়ম জানা ছিল না। অগত্যা ভরসা ইন্টারনেট (Internet)। সেই ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত নম্বরে ফোন করতেই খোয়া গেল ২ লক্ষ টাকা।
জানা গিয়েছে, ইন্টারনেটে ক্রেডিট কার্ডের পেমেন্ট পদ্ধতির জানতে চেয়ে খোয়া গেল লক্ষাধিক টাকা। অত্যাধুনিক সাইবার প্রতারণার পর্দা ফাঁস করলো বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছে প্রতারণা চক্রের কিংপিন মাসুদ মন্ডল। উদ্ধার বিপুল সংখ্যক ডেবিট কার্ড ও মোবাইল ফোন।
চলতি বছরের মার্চ মাসে সল্টলেকের এ বি ব্লকের বাসিন্দা ৬১ বছরের অরুণাভ বসু বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় এসে অভিযোগ করেন যে তিনি সিটি ব্যাঙ্ক থেকে একটি ক্রেডিট কার্ড নিয়েছিলেন। সেই কার্ড আসার পরে তিনি অনলাইন লেনদেন করতে পারছিলেন না। লেনদেনের প্রক্রিয়া জানতে তিনি ইন্টারনেটে সার্চ করেন। সেই সময় ইন্টারনেট থেকে একটি নম্বর তিনি পান। সেই নম্বরে যোগাযোগ করলে তাকে অন্য একটি নম্বর থেকে পুনরায় ফোন করা হয়।
জানা যায়, সেখানে তাকে ক্রেডিট কার্ডের ক্রেডেন্সিয়াল দিতে বলা হয়। তিনি সেটা দেওয়ার পর একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড তার ফোনে আসে। সেই পাসওয়ার্ড তিনি শেয়ার করতেই তার অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার হয়ে যায় অন্য একটি অ্যাকাউন্টে।
আরও পড়ুন, কলেজে ক্লাস বন্ধ রেখে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প, কোন্নগর জুড়ে পড়ল এসএফআই এর পোস্টার
ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে একটি চক্র নিজেদের ব্যাঙ্ক কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে ফোন করত। এরপরই সেই ব্যক্তির ব্যাঙ্ক থেকে টাকা একটি অনলাইন ওয়ালেটে ট্রান্সফার করে নেয়। সেই সূত্র ধরে ওই অনলাইন ওয়ালেটে সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। সেখান থেকে ১ লক্ষ টাকা অভিযোগকারী ব্যক্তিকে ফেরত করিয়ে দিতে সক্ষম হয় পুলিশ বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
এরপরই তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে এই ফোনটি করা হত ঝাড়খণ্ড থেকে। কিছুদিন আগে মহম্মদ সফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে এই মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। সেখান থেকেই পুলিশ জানতে পারে এই চক্রের কিংপিন মাসুদ মন্ডল। সেই সূত্র ধরে গতকাল রাতে অভিযুক্ত মাসুদ মণ্ডলকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর এই মাসুদ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ভুয়ো সিম কার্ড তুলে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করত। সেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট গুলির ডেবিট কার্ড নিজের ঠিকানায় আনতেন এই অভিযুক্ত। এই অভিযুক্তের কাছ থেকে ১৪টি ডেবিট কার্ড এবং ৭টি মোবাইল ফোন সহ একাধিক নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ অভিযুক্তকে বিধাননগর আদালতে তোলা হবে। পুলিশ তাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত সেই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।