রঞ্জিত সাউ, বিধাননগর: বহু বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছেন, সন্তান নেই। বাড়িতে একাই থাকেন বৃদ্ধা (Old Lady)। প্রতিদিন এসে কাজ করে যান এক পরিচারিকা। নিয়ম মতো সকালে আসেন। কাজ সেরে ফিরে যান। আজও এসেছিলেন, কিন্তু অনেকক্ষণ করে কলিংবেল বাজিয়েও সাড়া দিচ্ছিলেন না ওই মহিলা। তা দেখে ঘাবড়ে যান পরিচারিকা। সকাল আটটা থেকে বারবার কলিংবেল বাজিয়েও উত্তর পাননি। তারপর বারবার ডেকেও সাড়া না পেয়ে চেঁচামেচি শুরু করেন তিনি। শেষপর্যন্ত খবর যায় পুলিশের কাছে। খবর শুনেই সল্টলেকের বিএল ব্লকের ৬৮ নম্বর ওই বাড়ির কাছে আসে বিধাননগর পূর্ব থানার (Bidhannagar East Police Station) পুলিশ।       


বিষয়টি জেনে পুলিশকর্মী (Police Rescue Operation) প্রথমে বাড়ির পাঁচিল বেয়ে ব্যালকনিতে ওঠে। ব্যালকনির জানালায় বেশ কিছুক্ষণ ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি করা হয়। কিছুক্ষণ পরে উত্তর দেন ওই বৃদ্ধা। পুলিশ জানতে চায় কেন তিনি সাড়া দিচ্ছিলেন না, ওই বৃদ্ধা জানান আগেরদিন রাতে পড়ে গিয়ে পায়ে এবং কোমরে চোট পেয়েছেন তিনি। সেই কারণেই চলাফেরাও করতে পারছেন না। শুনতে পাচ্ছিলেন সবই, কিন্তু তাঁর ডাক কেউ শুনতে পারছিলেন না। এরপর পুলিশকর্মীরা নানাভাবে দরজা খোলার চেষ্টা করে কিন্তু দরজা খোলা যায়নি। সেই কারণেই শেষ পর্যন্ত বাড়ির পিছনের রান্নাঘরের দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢোকে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ঘরে গিয়ে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করা হয়। প্রথমে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলেও ওই বৃদ্ধা হাসপাতালে যেতে রাজি হননি। সেই কারণে পুলিশের তরফ থেকে ডাক্তার ডেকে আনা হয়, বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। যে কোনও সমস্যা হলে ওই বৃদ্ধা যাতে পুলিশকে জানায় সেই কথাও বলা হয়। প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করার ক্ষেত্রেও সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে।       


বছর ৬৮-র ওই বৃদ্ধা বাড়িতে একাই থাকেন। স্থানীয়দের সূত্রে দাবি, সেই অর্থে বাড়িতে আর কেউ নেই বৃদ্ধার। রাতেও একাই থাকেন। সেই সময়েই হঠাৎ পড়ে গিয়ে এমন চোট পেয়েছেন। সেই অবস্থায় পুলিশকর্মীরা তড়িঘড়ি এসে যেভাবে তাঁকে উদ্ধার করেছেন, যেভাবে সাহায্য করেছেন তাতে অভিভূত এলাকায় বাসিন্দারা।  


আরও পড়ুন: বিশ্বাসঘাতকতা থেকে সাবধান, লোভে পা দেবেন না কারা? কেমন যাবে আগামীকাল?