বোলপুর: লটারি-তদন্তে (Lottery) অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ বোলপুরের (Bolpur News) বড় শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা কটাই শেখের। তাঁর দাবি, ১ কোটি টাকার লটারি জিতেছিলেন তাঁর ছেলে শেখ নুর আলি। কিছু লোক এসে টিকিট দিয়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দেন। তাতে ভয় পেয়ে সাতদিন গ্রামছাড়া ছিল তাঁদের পরিবার।


লটারিকাণ্ডে অনুব্রতর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ


কটাইয়ের দাবি, গ্রামে ঘুরে ঘুরে লটারির টিকিট বিক্রি করা কালাম শেখের কাছ থেকে টিকিট কিনেছিল তাঁর ছেলে। তাতে টাকা জেতেন তাঁরা। তার পরই শুরু হয় চাপসৃষ্টি, ভয় দেখানো। তাতে গ্রামছাড়া হন তিনি ও দুই ছেলে। ফিরে আসার পর জোর করে কেড়ে নেওয়া হয় লটারির টিকিট। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর চাওয়া হলেও, প্রথমে টাকা দেওয়া হয়নি। এর পর ৫-৭ লক্ষ টাকা দেওয়া হয় বলে দাবি অভিযোগকারীর।


বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডলের নামে এক কোটি টাকার লটারি-তদন্তে বড় শিমুলিয়া গ্রামে শেখ নুর আলির বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই (CBI)। শান্তিনিকেতনে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে তলব করা হয় নুরকে। লটারি-রহস্যভেদে খতিয়ে দেখা হচ্ছে ওই ব্যক্তির সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য। 


আরও পড়ুন: Anubrata Mandal: ৮৩-তে কথা পাকা করে ধরান মাত্র ৭ লক্ষ, আসল বিজয়ীর কাছ থেকে টিকিট বাগিয়ে নেন অনুব্রত!


গরুপাচার মামলায় লটারির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার অভিযোগ উঠেছে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে। সিবিআই সূত্রে দাবি, অনুব্রত ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা একের পর এক লটারি জিতেছেন। আর সেই লটারির নাম করেই লেনদেন হয়েছে কোটি কোটি টাকা, দাবি সিবিআই সূত্রে। 


অনুব্রতর নামে ১ কোটি টাকার লটারির টিকিটের মালিকানা-সন্ধানে বোলপুরে সিবিআই। বড় শিমুলিয়া গ্রামে শেখ নুর আলির বাড়িতে তল্লাশি। জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে আজই তলব তলব করা হয় নুরকে। এই মুহূর্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে শেখ নুর আলির সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য। গরুপাচার মামলায় লটারির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। 


লটারিকাণ্ডের তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে গোয়েন্দাদের হাতে। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুব্রত, তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের অ্যাকাউন্টে একাধিক বার লটারির টাকা ঢুকেছে। অনুব্রতর লটারিপ্রাপ্তির তদন্তে এখনও পর্যন্ত পাঁচটি পুরস্কারের হদিশ মিলেছে। তিন বছরে পাঁচটি লটারি বাবদ প্রায় ২ কোটি টাকা ঢোকে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।


অনুব্রত এবং সুকন্যার অ্যাকাউন্টে পাঁচ বার লটারির টাকা ঢোকে!


এ ব্যাপারে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় মধ্যস্থতা করেছিলেন বলে সিবিআই সূত্রে খবর। এ দিন সিবিআই-এর সামনে হাজিরা দেন এক লটারি বিক্রেতাও। তিনি জানান, বিশ্বজ্যোতি এবং মাহিরি গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান ভজা মারফত 'ডিল' হয়। তাতে ৮৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে টিকিট হস্তান্তর হবে বলে ঠিক হয়। যদিও নুরের পরিবারের দাবি, ৮৩ লক্ষের কথা বললেও ৭ লক্ষ টাকা ধরানো হয়েছিল। টিকিট পেতে তাঁদের প্রাণনাশ, গ্রামছাড়া করার হুমকিও দেওয়া হয় বলে দাবি কটাইয়ের।