ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: বীরভূমে (Birbhum) কি এবার অনুব্রত জমানার পতন? জেলা পরিষদের পর এবার কর্মাধ্যক্ষ পদেও কাজল ঘনিষ্ঠদের দাপট। স্থায়ী সমিতি থেকে বাদ পড়লেন অনুব্রত অনুগামীরা। কর্মাধ্যক্ষ পদে নাম ঘোষণার পরেও পদত্যাগ করেন রবি মুর্মু ও নারায়ণ হালদার। 'একজন তো সারা জীবন থাকতে পারে না, তাই এই পরিবর্তন'। তৃণমূলের প্রতিক্রিয়ায় কার্যত বিরোধীদের জল্পনাই মান্যতা পেয়েছে। 

গত ১৬ অগাস্ট, বীরভূম (Birbhum) জেলা পরিষদের সভাধিপতি হন একদা অনুব্রত-বিরোধী বলে পরিচিত তৃণমূলের কাজল শেখ (Kajal Seik)। জেলা পরিষদের সহ সভানেত্রী হন স্বর্ণলতা সোরেন। নানুর থেকে জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন কাজল শেখ। অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর থেকেই জেলা রাজনীতিতে রকেট গতিত উত্থান কাজলের। ২৪-এর লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করেছে তৃণমূল। সূত্রের খবর, বীরভূমে একদিকে সংখ্য়ালঘু ভোট, আরেক দিকে মহম্মদবাজারের কয়লা খাদান, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহ সভাধিপতি নির্বাচনে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে তৃণমূল। 

অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বিকাশ রায়চৌধুরীর বদলে আগেই জেলা সভাধিপতি করা হয়েছে কাজল শেখকে। এবার কি বীরভূম জেলা পরিষদে কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ কর্মাধ্যক্ষদের সরানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেল? নাম ঘোষণার পরও, কর্মাধ্যক্ষের পদে থাকতে চান না বলে দুই নেতার চিঠি দেওয়ার পরই শুরু হল জল্পনা। যদিও এ নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। 

এক সময়ে বীরভূমের বেতাজ বাদশা, অনুব্রত মণ্ডল গরুপাচার মামলায় বর্তমানে তিহাড় জেলে বন্দি! তাহলে এবার কি লালমাটির জেলায় তৃণমূলের ব্যাটন চলে যাচ্ছে অনুব্রত-বিরোধী শিবিরের বলে পরিচিত কাজল শেখের হাতে? সম্প্রতি বীরভূম জেলা পরিষদে একের পর এক অনুব্রত-অনুগামীর সরে যাওয়ার পর এখন এই প্রশ্নই জোরালভাবে উঠতে শুরু করেছে!

গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর, জেলায় ধাপে ধাপে গুরুত্ব বাড়তে শুরু করে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর বলে পরিচিত কাজল শেখের!প্রথমে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটি তারপর জেলা পরিষদের প্রার্থী, প্রথমবার জয়ের পরই বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি!

কাজলের আগমনে সরানো হয়েছে দু'বারের জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সিউড়ির তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীকে। এ ছাড়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পদে অনুব্রত-অনুগামী বলে পরিচিত নারায়ণ হালদার ও আদিবাসী নেতা রবি মুর্মুর নাম ঘোষণার পরও, তাঁরা চিঠি দিয়ে সেই পদে না থাকার কথা জানিয়ে দিয়েছেন! অন্যদিকে, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হিসেবে নাম ঘোষণা হয়েছে বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় গোষ্ঠীর বলে পরিচিত নুরুল ইসলামের!

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, বীরভূমের রাজনীতিতে কাজল শেখের উত্থানই কি তাহলে অনুব্রত মণ্ডলের পতনের শুরু? যদিও এমনটা মানতে নারাজ খোদ বীরভূমের জেলা সভাধিপতি ও তৃণমূল নেতা কাজল শেখ। 

আরও পড়ুন: Purulia News: ঝালদা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পদে ইস্তফা পূর্ণিমা কান্দুর