বীরভূম: অনুব্রতহীন বীরভূমে (Birbhum) এবার কাজল শেখের মুখে শোনা গেল খেলা হবে স্লোগান। গতকাল রামপুরহাটে INTTUC-র বিজয়া সম্মিলনীতে বিজেপির নাম না করে হুঁশিয়ারি দেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ (Kajal Seikh)। মঞ্চে উপস্থিত বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় ও রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে কাজল বলেন, ভোটের আগে বহিরাগতরা বীরভূমে এলে তাদের কোথায় পাঠাতে হবে, তা কর্মীদের পরে জানিয়ে দেবেন। এরপরই তৃণমূলের দাপুটে নেতার গলায় শোনা যায় খেলা হবে স্লোগান। বিজেপির পাল্টা কটাক্ষ, একজন খেলা হবে বলে হুমকি দিয়ে তিহাড় জেলে বন্দি, এঁকেও ভিনরাজ্যে যেতে হবে। 


অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত কাজল শেখ। এর আগেও একাধিকবার সুর চড়াতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। তবে এ নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য় করতে শোনা যায়নি তাঁকে, বরং অনুব্রতকে রাজনৈতিক গুরু বলেই উল্লেখ করেন তিনি। সম্প্রতি অনুব্রতহীন বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রামের বাড়ির পুজোয় যোগ দেন কাজল শেখ। জেলে থাকার কারণে গত দু-বছর গ্রামের বাড়ির পুজোয় যোগ দিতে পারেননি অনুব্রত। এবার সেই পুজো কেমন হচ্ছে, কেষ্টর বাড়ির সদস্যরা কেমন আছেন, খোঁজ নিতে নানুরের হাটসেরান্দি গ্রামে গেলেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধপতি কাজল শেখ।


কিছুদিন আগেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল বীরভূমে (Birbhum) কি এবার অনুব্রত জমানার পতন? কারণ জেলা পরিষদ, কর্মাধ্যক্ষ পদেও কাজল ঘনিষ্ঠদের দাপট বেড়েছে। স্থায়ী সমিতি থেকে বাদ পড়েছেন অনুব্রত অনুগামীরা।


গত ১৬ অগাস্ট, বীরভূম (Birbhum) জেলা পরিষদের সভাধিপতি হন একদা অনুব্রত-বিরোধী বলে পরিচিত তৃণমূলের কাজল শেখ (Kajal Seik)। জেলা পরিষদের সহ সভানেত্রী হন স্বর্ণলতা সোরেন। নানুর থেকে জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন কাজল শেখ। অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর থেকেই জেলা রাজনীতিতে রকেট গতিত উত্থান হয় কাজলের। ২৪-এর লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করেছে তৃণমূল। সূত্রের খবর, বীরভূমে একদিকে সংখ্য়ালঘু ভোট, আরেক দিকে মহম্মদবাজারের কয়লা খাদান, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহ সভাধিপতি নির্বাচনে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে তৃণমূল। 


অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বিকাশ রায়চৌধুরীর বদলে আগেই জেলা সভাধিপতি করা হয়েছে কাজল শেখকে। এবার কি বীরভূম জেলা পরিষদে কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ কর্মাধ্যক্ষদের সরানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেল? নাম ঘোষণার পরও, কর্মাধ্যক্ষের পদে থাকতে চান না বলে দুই নেতার চিঠি দেওয়ার পরই শুরু হল জল্পনা। যদিও এ নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। 


এক সময়ে বীরভূমের বেতাজ বাদশা, অনুব্রত মণ্ডল গরুপাচার মামলায় বর্তমানে তিহাড় জেলে বন্দি! তাহলে এবার কি লালমাটির জেলায় তৃণমূলের ব্যাটন চলে যাচ্ছে অনুব্রত-বিরোধী শিবিরের বলে পরিচিত কাজল শেখের হাতে? সম্প্রতি বীরভূম জেলা পরিষদে একের পর এক অনুব্রত-অনুগামীর সরে যাওয়ার পর এখন এই প্রশ্নই জোরালভাবে উঠতে শুরু করেছে!