ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: পৌষ মেলার বৈঠকে বসেও হঠাৎ বেরিয়ে গেলেন কাজল শেখ। বোলপুর (Bolpur) এসডিও অফিসে এদিন পৌষ মেলা নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠক থেকে কেন বেরিয়ে গেলেন প্রশ্ন করায়, কাজল শেখ বলেন, 'ডিএমকে জিজ্ঞেস করুন।'


হঠাৎ বৈঠক ছাড়লেন কাজল শেখ: চলতি বছর পৌষ মেলা করছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে এই মেলা করা হবে। আগামীকাল থেকে মেলার কাজ শুরু হয়ে যাবে। মেলা পরিচালনার জন্য ১০টি কমিটি করা হয়েছে। ২৪-২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেলা থাকবে। এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এদিন বৈঠক ছিল। কিন্তু দেখা যায়,  বৈঠক শুরুর ২০ মিনিটের মধ্যেই বেরিয়ে গেলেন কাজল শেখ। বর্তমানের বীরভূম জেলা পরিষদের সভাপতি তৃণমূলের কাজল শেখ। এদিন বেরিয়ে যেতে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কেন বৈঠক থেকে বেরিয়ে গেলেন? উত্তরে তিনি বলেন, 'ডিএমকে জিজ্ঞেস করুন।' পাল্টা জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, "এসেছিলেন, হয়ত কোনও মিটিং ছিল।'  


এদিকে গতকাল বোলপুরের মহকুমা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বেশ কিছু শর্ত ও প্রশ্ন উল্লেখ করা হয়েছে ওই চিঠিতে। কী বলা হয়েছে চিঠিতে?



  • 'গ্রিন ট্রাইবুনাল' বিশ্বভারতীর প্রাঙ্গণে পৌষমেলার (Poush Mela) আয়োজন নিয়ে যে শর্তগুলি বেঁধে দিয়েছে তা রক্ষা করা সম্ভব হবে কি না।

  • বিশ্বভারতী এবং শান্তিনিকেতন (Shantiniketan Trust) ট্রাস্ট যেহেতু এই বছর পৌষমেলার আয়োজন করছে না, তাই ওই প্রাঙ্গণে বোলপুর মহকুমা প্রশাসন মেলার আয়োজন করলে, যদি কোনও আইনি জটিলতা তৈরি হয়, জেলা প্রশাসন তার সমস্ত দায়িত্ব গ্রহণ করতে সম্মত হবে কিনা৷

  • বিশ্বভারতীর সাংস্কৃতিক এবং নান্দনিক রুচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই মেলা অনুষ্ঠিত করা যাবে কি না৷

  • 'গ্রিন ট্রাইবুনাল' নির্দেশিত সময়ের ভিতর মেলা শেষ করে, মেলার মাঠটি পরিষ্কার করে, মহকুমা প্রশাসন বিশ্বভারতীকে পূর্ববস্থায় ফিরিয়ে দিতে পারবে কি না৷

  • মেলা সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয় বোলপুর মহকুমা প্রশাসন বহন করতে পারবে কি না৷

  • মেলা প্রাঙ্গণে মেলা করার জন্য বিশ্বভারতীর অনুমতি ছাড়া, মেলার জন্য প্রয়োজনীয় বাকি যাবতীয় অনুমতি বোলপুর মহকুমা প্রশাসন নিজেদের উদ্যোগে নিশ্চিত করবে কি না।

  • মেলা চলাকালীন বিশ্বভারতীর ছাত্র-ছাত্রী, অধ্যাপক-কর্মীদের সামগ্রিক নিরাপত্তা ও পঠনপাঠনের পরিবেশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুনিশ্চিত করা যাবে কি না।

  • ২০১৯ সালে পৌষমেলার শেষে নির্ধারিত সময়ে মাঠ ফাঁকা করতে গিয়ে বিশ্বভারতীর কর্মীদের নানা অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়, যা শেষ পর্যন্ত শান্তিনিকেতন থানায় কয়েকটি ফৌজদারি মামলা হিসাবে নথিভুক্ত হয়। এই মামলাগুলির জন্য বিশ্বভারতীর কর্মীদের মনোবল অনেকটাই ভেঙে গিয়েছে। বিশ্বভারতীর সঙ্গে জেলা প্রশাসনের সুসম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে, এই মামলাগুলির নিষ্পত্তির মাধ্যমে কর্মীদের মনোবল ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বিশ্বভারতীর প্রাঙ্গণে এবছরের পৌষমেলা সহায়ক হতে পারে কি না।

  • শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট মেলা প্রাঙ্গণে মেলা করার জন্য বিশ্বভারতীকে কুড়ি হাজার টাকা প্রদান করে বিশ্বভারতীর কৃতজ্ঞতাভাজন হয়ে এসেছে। মেলা প্রাঙ্গণ ব্যবহার করা বাবদ মহকুমা প্রশাসন বিশ্বভারতীকে অন্তত সেই পরিমাণ টাকা দিতে পারবে কিনা


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।  


আরও পড়ুন: South Bengal Weather: কুয়াশার চাদরে মোড়া সকাল, দক্ষিণবঙ্গে কমতে পারে রাতের তাপমাত্রা