বীরভূম: 'জমি দখল' বিতর্কের মধ্যেই নোবেলজয়ীর বাড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Mamata Banerjee) শান্তিনিকেতন গিয়েই প্রতীচিতে অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) বাড়ি গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে পৌঁছে অমর্ত্য সেনকে জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি। সোমবার নোবেলজয়ীর বাড়িতে গিয়ে জমি দকল প্রসঙ্গে নাম না করেই বিশ্বভারতীকে (Visva Bharati University) আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, 'অনেক দিন ধরে সহ্য করছি, মিথ্যে বলছে, আমার কাছে জমির রেকর্ড আছে। রেকর্ড তুলে নিয়ে এসেছি, যা করার করুক, ফিরেই ডিএমকে নির্দেশ দেব'। এ দিন বিশ্বভারতীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'অমর্ত্য সেনকে যেভাবে অপমান করা হচ্ছে, আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। ল্যান্ড রেকর্ড তুলে নিয়ে এসেছি, যা করার করুক।  বিনে পয়সায় জমি পেয়ে আবার খবরদারি করতে এসেছে'। 


বীরভূমে মমতা: কেষ্ট-হীন বীরভূমে আজ প্রথম সফর মমতার। আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একগুচ্ছ কর্মসূচি ছিল দিনভর। বেলা সাড়ে ১২টায় সল্টলেকের উন্নয়ন ভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দেন তিনি। তার পর সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে বইমেলার উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠান শেষে সল্টলেক থেকেই কপ্টারে করে বীরভূম যান মুখ্যমন্ত্রী। জেলার সাংসদ, বিধায়ক, ব্লক সভাপতি, জেলা কোর কমিটির সদস্য-সহ মোট ৭০ জনকে নিয়ে বৈঠক করার কথা তাঁর। আগামীকাল ৩১ জানুয়ারি, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের একাংশের। সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে তাঁর। এরপর পয়লা ফেব্রুয়ারি বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে প্রশাসনিক সভা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। 


বিশ্বভারতীর অভিযোগ: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন অবৈধভাবে বিশ্বভারতীর জমি দখল করে রয়েছেন। অতি শীঘ্র ১৩ ডেসিমেল জমি বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দিতে হবে। এই মর্মে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নোটিস ঘিরে শুরু হয় জোরাল বিতর্ক। বাড়ির জমির একটা অংশ বিশ্বভারতীর থেকে লিজ নেওয়া, কিছুটা জমি কেনা। বানানো, মিথ্যে কথা বলছেন কর্তৃপক্ষ। ওদের রুচিতে এমনটাই মানায়। এবিপি আনন্দকে কড়া প্রতিক্রিয়া দেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের বাড়ি ঘিরে ঘনিয়েছে বিতর্কের মেঘ। 


সম্প্রতি অধ্যাপক সেনকে নোটিস দিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, অমর্ত্য সেন অবৈধভাবে বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে আছেন। এই জমি যত দ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দিন। আপনি যদি চান বিশ্ববিদ্যালয় এবং আপনার সার্ভেয়ার বা আইনজীবীর উপস্থিতিতে যৌথভাবে জমির জরিপ করা হবে। 


আর এই প্রেক্ষাপটেই যখন জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে অমর্ত্য সেন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে সংঘাত চরমে উঠেছে। তখনই শান্তিনিকেতনে অমর্ত্য সেনের বাড়ি গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে নিয়ে গেলেন বিশ্বভারতীর জমির নথিপত্রও। বললেন, ‘জমির নথি নিয়ে এসেছি, শেষ দেখে ছাড়ব’।