লখনউ: তিনি ক্রিজে নামা মানেই চার-ছক্কার বন্যা। উইকেটের চারধারে এতরকম শট খেলতে পারেন যে, তাঁর নামকরণই হয়ে গিয়েছে নতুন মিস্টার থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি। এ বি ডিভিলিয়ার্সের পর। যদিও লখনউয়ে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ অন্য মেজাজে দেখা গেল সূর্যকুমার যাদবকে (Suryakumar Yadav)। লো স্কোরিং ম্যাচে ধৈর্যশীল, সাবধানী ইনিংস খেললেন 'স্কাই'। মাত্র ১ বল বাকি থাকতে বাউন্ডারি মেরে জেতালেন ভারতীয় দলকে (Ind vs NZ)।
ম্যাচে ভারতের সামনে লক্ষ্য ছিল মাত্র ১০০ রানের। সেই রান তাড়া করতে গিয়ে ১০.৪ ওভারে ৫০/৩ হয়ে গিয়েছিল ভারত। সেখান থেকে সতর্ক জুটি গড়ে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন সূর্যকুমার যাদব ও ওয়াশিংটন সুন্দর। তখনই ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান ওয়াশিংটন। বলা ভাল, সূর্যকুমারের উইকেট বাঁচাতে নিজের উইকেট বিসর্জন দেন তামিলনাড়ুর ক্রিকেটার।
৩১ বলে অপরাজিত ২৬ রান করে ম্যাচের সেরা হয়েছেন সূর্যকুমার। যদিও ওয়াশিংটনের রান আউট নিয়ে নিজেকে দোষারোপ করেছেন স্কাই। ম্যাচের সেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে বলেছেন, 'ওয়াশি (দলে ওয়াশিংটন সুন্দরের ডাকনাম) আউট হওয়ার পরে আমি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম যাতে শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে ম্যাচ জিতিয়ে আসতে পারি। ভুলটা আমার ছিল। আমি দেখিনি বলটা কোথায় গিয়েছে। রান নিতে দৌড়েছিলাম।'
কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁকে যে অন্যরকমভাবে ব্যাট করতে হয়েছিল, জানিয়েছেন স্কাই। বলেছেন, 'এই ম্যাচে স্কাইয়ের নতুন এক সংস্করণ দেখা গেল। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা জরুরি ছিল। উইকেট কঠিন ছিল ঠিকই। তবে মানিয়ে তো নিতেই হবে। শেষে একটা বড় শট দরকার ছিল আর আমাদের শান্ত থাকাটা জরুরি ছিল। আমি জয়ের রানটা তোলার আগে হার্দিক বলেছিল, এই বলে জয়ের জন্য শট খেলো। ওই কথাটা খুব আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল।'
কঠিন পিচ। অল্প রানের লক্ষ্যমাত্রা। কিন্তু তাতেও কঠিন লড়াইের মুখে পড়তে হল ভারতকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিউয়িদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জিতে সিরিজে সমতা ফেরাল হার্দিক বাহিনী। শেষ ওভারে ১ বল বাকি থাকতে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতান সূর্যকুমার যাদব। এই জয়ের সঙ্গে সঙ্গেই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-১ সমতা ফেরাল টিম ইন্ডিয়া।
এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। কিন্তু অটল বিহারী বাজপেয়ী স্টেডিয়ামের কঠিন পিচ ও ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সুবাদে মাত্র ৯৯ রানে শেষ হয়ে যায় কিউয়িদের ইনিংস। সর্বোচ্চ ১৯ রান করেন স্যান্টনার নিজে। ১৪ রান করেন মার্ক চাপম্যান ও ব্রেসওয়েল। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে ২ উইকেট নেন অর্শদীপ সিংহ। ১টি করে উইকেট পান হার্দিক, যুজবেন্দ্র চাহাল, ওয়াশিংটন সুন্দর, দীপক হুডা ও কুলদীপ যাদব।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ঈশান কিষাণ ও শুভমন গিল ভালই শুরু করেছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ১১ রানের মাথায় শুভমন আউট হতেই রানের গতি কমে যায়। রাহুল ত্রিপাঠির সঙ্গে একটা পার্টনারশিপ গড়ার চেষ্টা করছিলেন ঈশান কিষাণ। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হতে হয় তাঁকে। এরপর ত্রিপাঠি নিজেও ফেরেন ১৩ রান করে। সূর্যকুমার যাদব ক্রিজে ছিলেন যদিও। শেষ পর্যন্ত হার্দিক পাণ্ড্যর সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে জিতিয়ে মাঠে ছাড়েন এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে বিশ্বের ১ নম্বর ব্যাটার।