ভাস্কর মুখোপাধ্য়ায়, নানুর : হাতাহাতির পর তৃণমূল অফিসে তালা ! তৃণমূল (TMC) নেত্রীর কড়া বার্তার পরেও নানুরে তৃণমূলের কোন্দলে কার্যত বিরাম নেই। এই পরিস্থিতিতে বীরভূম (Birbhum) জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে সতর্ক করা হল নানুরের ব্লক সভাপতি ও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ককে। অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) দেখানো পথেই বীরভূমে পঞ্চায়েত ভোট করানোর ব্যাপারে একমত হয়েছে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটি।
ফের সামনে নানুরে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব
সামনে পঞ্চায়েত ভোট। এমন সময় বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি গরু পাচারকাণ্ডে তিহাড় জেলে বন্দি। এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার, বীরভূমের তৃণমূল নেতাদের দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সতর্ক করে দিয়েছিলেন নানুরের তৃণমূল নেতা ও কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখকেও। কিন্তু তৃণমূল নেত্রীর কড়া বার্তার পরেও নানুরে তৃণমূলের কোন্দলে কার্যত বিরাম নেই। উল্টে রবিবার যখন বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক চলছে, তখন আলোচনায় বারবার উঠে এল সেই নানুর।
সতর্ক করা হল দু'পক্ষকেই
কালীঘাটে তৃণমূল নেত্রীর বীরভূম বৈঠকের পরদিনই নানুরে দলের পার্টি অফিসের মধ্যেই অনুব্রত ঘনিষ্ঠ অনুব্রত অনুগামী ও কাজল ঘনিষ্ঠদের মধ্যে হাতাহাতির খবর সামনে আসে। রবিবার, কীর্ণাহারে, পার্টি অফিসে তালা ঝোলানোর অভিযোগ ওঠে নানুরের তৃণমূল বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাঝির বিরুদ্ধে। এদিন বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে নানুর বিধানসভা এলাকায় দলীয় কোন্দল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সতর্ক করা হয় কাজল ঘনিষ্ঠ নানুরের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য ও তৃণমূল বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাঝিকে।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল কালীঘাটের বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী সতর্ক করে দেওয়ার পরে, এদিন কোন্দল ইস্যুতে মুখে কার্যত কুলুপ এঁটেছিলেন অনুব্রত বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা কাজল। এদিকে, রবিবার তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বীরভূমের যে সমস্ত ব্লকে সভাপতি পদ খালি আছে, দ্রুত তা পূরণ করা হবে। পাশাপাশি অনুব্রত মণ্ডলের দেখানো পথেই বীরভূমে পঞ্চায়েত ভোট করানোর ব্যাপারেও একমত জেলা তৃণমূলের কোর কমিটি। বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শতাব্দী রায় বলেছেন, 'জিততে হবে। এটাই আমাদের একটাই বার্তা। সবাইকে মিলে চলতে হবে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। অনুব্রতকে মিস করছি না কাজের ক্ষেত্রে।'
তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক শেষে হয় শুরু হয় বর্ধিত জেলা কমিটির বৈঠক। বীরভূমের ১৬৭টি পঞ্চায়েতের প্রধান, ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি, পুরসভার চেয়ারম্যান, তৃণমূলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে। সেখানে নানুরে দ্বন্দ্বের পাশাপাশি বগটুই নিয়েও আলোচনা হয়। তৃণমূল সূত্রে খবর, কাজল শেখ এবং রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি সৈয়দ ফিরাজ জিম্মিকে দ্রুত স্বজনহারাদের সঙ্গে কথা বলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।