সুকান্ত মুখোপাধ্য়ায় ও পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : নিয়োগ-দুর্নীতিকাণ্ডে (Recruitment Scam) ধৃত নাইসা-র ভাইস প্রেসিডেন্ট নীলাদ্রি দাসের মোবাইল ফোনে রয়েছে গোপন তথ্যের ভাণ্ডার! এমনটাই অনুমান সিবিআইয়ের (CBI)। তাতে কী কী তথ্য় লুকিয়ে, জানতে, সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে ফোনটিকে।
নিলাদ্রির ফোনে তথ্য ভাণ্ডার
নিয়োগ-দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত, OMR শিট মূল্যায়নকারী সংস্থা নাইসা-র ভাইস প্রেসিডেন্ট নীলাদ্রি দাসের (Niladri Das) মোবাইল ফোনটিকে গোপন তথ্যের ভাণ্ডার বলে মনে করছে সিবিআই। এবার ওই ভাণ্ডারের হদিশ পেতে তৎপর কেন্দ্রীয় সংস্থা।
CBI-এর দাবি, SSC কর্তাদের সুপারিশ অনুযায়ী, চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা মেসেজ করে নাইসা-র কর্মীদের কাছে পাঠাতেন নীলাদ্রি। ওই কর্মীরাই সার্ভারে ঢুকে নম্বর কারচুপি করতেন। সেই মতো চাকরিপ্রার্থীর নম্বর বাড়ানো হত। CBI সূত্রে দাবি, চাকরিপ্রার্থীদের নামের বেশ কিছু তালিকা ও অ্যাডমিট কার্ডের রোল নম্বর পাওয়া গেছে নীলাদ্রির মোবাইল ফোনে। মিলেছে বেশ কয়েকজন SSC-এর এক আধিকারিকের ফোন নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট।নীলাদ্রির মোবাইল ফোনে লুকিয়ে থাকা তথ্য জানতে, আলিপুর আদালতের নির্দেশে তা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে।
আগেও গ্রেফতার
চার বছর আগে CID-র হাতে গ্রেফতার হওয়া OMR শিটের মূল্যায়ণকারী সংস্থা নাইসা (NYSA)-র ভাইস প্রেসিডেন্ট নীলাদ্রি দাসকেই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ফের গ্রেফতার করেছে CBI। প্রতারণার অভিযোগে, ৪ বছর আগেই নীলাদ্রির বিরুদ্ধে স্বত:প্রণোদিত মামলা রুজু করেছিল CID। চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার দায়ে গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। সূত্রের দাবি, তখন থেকেই স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি।
CBI সূত্রে দাবি, কার্যত চোরের উপর বাটপাড়ি করতে গিয়েই গ্রেফতার হতে হয়েছিল নীলাদ্রিকে। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য জুড়ে শোরগোল শুরু হওয়ার প্রায় চার বছর আগে, ৯ জনের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে, ২০১৯-এর জানুয়ারি মাসে, পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে CID। ওই বছরের ৭ মার্চ, দিল্লি থেকে নীলাদ্রি ও তাঁর এক সহযোগীকে গ্রেফতার করে CID। কিন্তু পরের মাসেই কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে যান নীলাদ্রি।
কিন্তু কী ছিল তাঁর modus operandi? নীলাদ্রিকে গ্রেফতারের পর CBI সূত্রেও দাবি করা হচ্ছে, চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা টাকা দিতেন, তাঁদের নাম SSC-র মাধ্যমে জানানো হত নাইসার ভাইস প্রেসিডেন্ট নীলাদ্রিকে। এরপর তিনি ওয়েবসাইটে নম্বর বাড়িয়ে দিতেন। কিন্তু কমিশনের দুর্নীতিগ্রস্ত আধিকারিকদের সুপারিশ অনুযায়ী অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা পাঠানোর পরও, ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে আরও কয়েকজনের নম্বর বাড়িয়ে দিতেন নীলাদ্রি। সেই জাল ছড়িয়ে ছিল বিভিন্ন জেলায়।
আরও পড়ুন- 'সুযোগ পেলে পার্টির ছেলেদের এখনও আমরা চাকরি দিই', উদয়নের মন্তব্যে ফের বিতর্ক!